অ্যাডিপোসাইটস কোশ, যাতে লিপিড সঞ্চিত থাকে তা স্থূলতার সময় বৃদ্ধি পেতে থাকে। এই স্থূলতা নিয়ন্ত্রণের জন্য কয়েক বছরের মধ্যেই বাজারে দুটো নতুন ওষুধ আসতে চলেছে।
জুন মাসে আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশনের একটা সভায় এবং নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন ১,২ -এ দুধরনের ওষুধের দ্বিতীয় পর্যায়ের ক্লিনিকাল ট্রায়ালের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালগুলোতে ওষুধের কার্যকারিতা এবং আদর্শ ডোজ কী হতে পারে তাও বলা হয়েছে। প্রথম ওষুধ হল – অরফোরগ্লিপ্রন যা ব্যবহার করা এবং উত্পাদন করা বেশ সহজ, তাছাড়া এটা বর্তমানে বাজার চলতি ওষুধের তুলনায় সস্তা হবে। ট্রায়ালে দেখা গেছে দ্বিতীয় ওষুধ রেটাট্রুটাইড যথেষ্ট কার্যকারী আর এটা ফার্মাকোলজিকাল ক্ষেত্রে স্থূলতা চিকিত্সার যে নিষেধাজ্ঞা আছে, তা খারিজ করতে পারে।
অরফোরগ্লিপ্রন ও রেটাট্রুটাইড উভয় ওষুধই নানা ধরনের পৌষ্টিক পদার্থের ক্ষেত্রে অন্ত্রের দেওয়াল থেকে কিছু হরমোন নিঃসরণ করে। এই হরমোনগুলো মস্তিষ্কের ওপর ক্রিয়া করে খাদ্যনালীর মধ্যে খাবার যাওয়ার গতি স্লথ করে দেয় আর ক্ষুধার ইচ্ছাও হ্রাস করে। এর ফলে মানুষের খাওয়ার ইচ্ছা কমে আর ওজন হ্রাস পায়।
আগে গ্লুকাগন লাইক পেপটাইড ১ (GLP-1) রিসেপ্টর অ্যাগনিস্ট শ্রেণি থেকে ট্রাইজেপাটাইড ( বাণিজ্যিক নাম – মৌনজারো ) ও সেমাগ্লুটাইড নামে ডায়াবেটিস চিকিৎসার ওষুধ ব্যবহৃত হত। সেমাগ্লুটাইড থেকে দুটো ওষুধ – অযেম্পিক যা ডায়াবেটিস চিকিৎসার ক্ষেত্রে, এবং অয়েগোভি, স্থূলতা কমাতে ব্যবহার করা হয়। আর মৌনজারো ও অয়েগোভি এই দুই ওষুধ স্থূল ব্যক্তিদের স্থূলতা হ্রাসের পাশাপাশি রক্তে শর্করার পরিমান আর অতিরিক্ত রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। কিন্তু দুটোই প্রতি সপ্তাহে ইনজেকশন হিসেবে নিতে হয়, যা রোগীদের ক্ষেত্রে বেশ বিরক্তিকর। আর এই পেপটাইড উৎপাদন করা যেমন খরচ সাপেক্ষ তেমনি শ্রমবহুল।
কানাডার হ্যামিল্টনের ম্যাকমাস্টার ইউনিভার্সিটির অভ্যন্তরীণ-মেডিসিন চিকিত্সক শন ওয়ার্টন, অরফোরগ্লিপ্রন গবেষণার সহ-লেখক জানিয়েছেন অরফোরগ্লিপ্রনের ওষুধ উৎপাদন করা বেশ সহজ আর তা খাওয়ার ওষুধ। এই ওষুধের দাম এখনও নির্ধারণ করা না গেলেও বাজারের চালু ওষুধের তুলনায় এর দাম অনেক সস্তা হবে।