কোটি কোটি আংটা, লক্ষ লক্ষ ফাঁদ আর কয়েক হাজার কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মাছধরার জাল প্রতি বছর সমুদ্রে জমা হয়। বাণিজ্যিক মৎস্য শিকারের ফলাফল। একবার এইসব সামগ্রী সমুদ্রে পরিত্যক্ত হলে জলজ প্রাণীর জীবন ওষ্ঠাগত হয় জালে জড়িয়ে গিয়ে, যাকে ঘোস্ট ফিশিং বলা হয়।
অস্ট্রেলিয়ার গবেষকরা এক নতুন প্রতিবেদনে জানাচ্ছেন, এক বছরে সাগরের বুকে জমা হওয়া মাছ ধরার জালে ১৮বার ঘিরে ফেলা যায় আমাদের পৃথিবীকে! তাসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রবিদ কেলসে রিচার্ডসন বলছেন, এগুলো শ্রেফ মনগড়া অনুমান নয় বরং মৎস্যজীবীদের কাছ থেকে সরাসরি পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নিয়ামানুগ গবেষণা।
নানান সামুদ্রিক প্রাণীর জীবনচক্রে প্রভাব পড়ে। জলের নীচে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মাছ, হাঙর বা তিমির মতো প্রাণীর মৃত্যুর খবরও পাওয়া গেছে। অস্ট্রেলিয়ার উপকূলেই শুধু প্রতিবছর বহু সংখ্যক জলজ প্রাণীর মৃত্যুর দৃষ্টান্ত দেখা যায়। তাদের বংশবিস্তারে ও স্বাভাবিকভাবে খাদ্যগ্রহণেও সমস্যা হয় বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
কিন্তু কেলসে রিচার্ডসন কিছু সমাধানের কথাও উল্লেখ করছেন। মাছ ধরার সরঞ্জাম নিয়মিত পরীক্ষা করা দরকার; সেগুলো হারালে বা নষ্ট হলে সময়মতো রিপোর্ট করা জরুরি। এছাড়াও মাছ ধরার মারাত্মক ঝুঁকিসম্পন্ন কিছু কেরামতি প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিৎ। সবশেষে পরিত্যক্ত মাছধরার জাল সমুদ্রে নিক্ষেপ না করে অন্যত্র ব্যবস্থা করার কথাও গবেষকরা বলছেন।
সায়েন্স অ্যাডভানস পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণাপত্রটা।