অপরের সুখে দুঃখে আমরা যে সুখী বা দুঃখী হই, এই আবেগের উৎস কোথা থেকে? কিংবা বিপদ আসন্ন দেখলে পরিচিতদেরও সতর্ক করে দিই কেন? মানুষ ছাড়া আরও কয়েকটা প্রাণীর যে সামাজিক সহমর্মিতা রয়েছে, বিবর্তনের কোন বাঁকে তার জন্ম হয়েছিল? এসব জটিল প্রশ্নে উত্তরের ধোঁয়াশা কিছুটা অবশ্যই কাটিয়ে দেবে পর্তুগালের দ্য ইন্সটিটিউটো গুলবেনকিয়ান দে সিয়ান্সিয়ার গবেষকরা।
সমুদ্রের জলে জেব্রাফিশের শরীর থেকে নির্গত রাসায়নিক পদার্থ কীভাবে কোনও বিশেষ ভয়ের বার্তা গোটা দলের কাছে পৌঁছে দেয়, তা নিয়ে প্রমাণ দাখিল করেছেন এই সিয়ান্সিয়ার বিজ্ঞানীরা। গবেষণা থেকে আন্দাজ করা হচ্ছে, কয়েক হাজার মিলিয়ন বছর আগে জলে বাস করা প্রাণীদের কাছ থেকেই এই বৈশিষ্ট্য আমরা অর্জন করেছি।
বিপদ ঘনিয়ে এলে, ভয়ের মাধ্যমে দলের অন্যদের কাছে খবরটা যদি চলে যায় তাহলে সামাজিকভাবে আমরাও সুবিধে পাই। নতুন কোনও রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটলে, ভূমিকম্প বা অগ্নিকান্ডের সময় একজনের প্রতিক্রিয়া অন্যদের কাছে সতর্কবার্তার মতো পৌঁছে যায়। মাছও তার ব্যতিক্রম নয়। যেমন – জেব্রাফিশ। এদের বৈজ্ঞানিক নাম ড্যানিও রেরিও। এই মাছেদের নিয়ে আগে অনেক পরীক্ষাতেই দেখা গেছে, সমুদ্রের কোনও শিকারি প্রাণী কাছাকাছি এলেই এদের কর্টিসোলের মাত্রা বেড়ে যায়। তাদের আচরণও এলোমেলো হয়ে যায়।
এই ধরনের ইমোশানাল সিগনালিং-এর জন্য মাছের শরীরেও একটা পেপটাইড দায়ী, মানুষের ক্ষেত্রেও। তার নাম অক্সিটোসিন। এই রাসায়নিক পদার্থকে তার গুনাগুণের জন্যে ‘লাভ হরমোন’ নামেও ডাকা হয়। কিন্তু সিয়ান্সিয়ার গবেষকরা বলছেন, শুধু প্রেমের জন্যেই নয়, প্রাণিবিদ্যার এর কাজকর্ম জটিল এবং বহুস্তরীয়।
সায়েন্স পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণাপত্র।