দেশ কাল ভেদে বিশ্বব্যাপী মানব পরিবারের সদস্য সংখ্যা কমছে, পূর্বাভাস অনুযায়ী ২০৯৫ সালের মধ্যে পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৩৫% কমবে। জার্মানির ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর ডেমোগ্রাফিক রিসার্চের গবেষকরা গাণিতিক মডেল ও জনসংখ্যার রেকর্ড থেকে এই তথ্য জানিয়েছেন। বিভিন্ন দেশের পরিবার পিছু সদস্যসংখ্যা ভিন্ন ভিন্ন, অর্থাৎ কোনো দেশের পরিবারের সদস্য সংখ্যা কম আবার কোনো দেশের পরিবার বড়ো হয়। ফলে দেশ ভেদে এই পরিবারপিছু জনসংখ্যা হ্রাস ভিন্ন হবে। তবে সামগ্রিকভাবে গবেষকরা বলছেন, তাদের গবেষণা জানাচ্ছে যে আগামী দশকগুলোতে পারিবারিক সহায়তার সূত্রগুলো কীভাবে পরিবর্তিত হতে চলেছে। এই গবেষণায় পরিবারের আকার হ্রাসের পিছনের কারণগুলিকে দেখা হয় নি, তবে এখানে বয়স্ক এবং অল্প বয়সীদের মৃত্যুহার কমছে তা বলা হয়েছে। ফলে সামাজিক নীতি, অর্থনৈতিক কারণ এবং পরিবার পরিকল্পনায় তার প্রভাব পড়ছে। সেই প্রবণতা থেকে প্রতিটি প্রজন্মে সন্তানের সংখ্যা কমছে। আর মূল পরিবারের সাথে জড়িয়ে থাকা ডালপালা মেলা বর্ধিত পরিবার দেখলেও দেখা যাচ্ছে ভাইপো, ভাইঝি, ভাগ্নে ভাগ্নিদের সংখ্যা কমছে।
মানুষের আয়ুষ্কাল বেড়ে যাওয়াতে, অর্থাৎ মানুষ যেহেতু বেশি দিন বাঁচছেন, পরিবারের সবচেয়ে ছোটো এবং সবচেয়ে বয়স্ক সদস্যদের মধ্যে বয়সের বড়ো ব্যবধান দেখা যাচ্ছে। পরিবারের বয়স্ক সদস্যরা ছোটোদের যত্ন করতে পারেন না বা প্রয়োজনীয় সমর্থন দিতে পারেন না, বরং তাদের নিজেদের সাহায্য প্রয়োজন হয়। গবেষণা থেকে জানা যাচ্ছে ব্যক্তি এবং তাদের আত্মীয়দের মধ্যে বয়সের ব্যবধান বাড়ার সাথে সাথে মানুষের পারিবারিক সূত্র শুধুমাত্র ছোটো হয়ে আসছে না, বয়স্ক আত্মীয়ের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। ফলে পরিবারগুলোর বাইরে থেকে সমর্থনের জন্য আরও লোকবল প্রয়োজন হয়ে পড়বে। গবেষকরা বলেন, যেখানে ১৯৫০ সালের একজন ৬৫ বছর বয়সী গড়ে ৪১ জন জীবিত আত্মীয় থাকত, ২০৯৫ সালে সেখানে ঐ ৬৫ বছর বয়সী মহিলার আশেপাশে মাত্র ২৫ জন জীবিত আত্মীয় থাকবে। আর পরিবারপিছু সদস্য সংখ্যা হ্রাস উন্নত দেশের পাশাপাশি, চিন , ভারতের মতো বহুল সংখ্যক জনসংখ্যার দেশেও প্রযোজ্য।