অবক্ষয়কারী বা ডিজেনারেটিভ রেটিনার রোগ বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ মানুষের জন্য একটা বিরাট সমস্যা। এই রোগে চোখের পিছনে ফটোরিসেপ্টর নামক আলোক-সংবেদনশীল কোশগুলো প্রতিস্থাপন ছাড়াই নষ্ট হয়ে যায়। গবেষকরা প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে চলেছেন, হয়তবা এই সমস্যার সমাধান খুব বেশি দূরে নয়।
কানাডার বিজ্ঞানীরা মুলার গ্লিয়াল কোশ নামক সুপ্ত সাহায্যকারী নিউরনকে কলাতে রূপান্তর করার এক উপায় আবিষ্কার করেছেন যা শঙ্কু আকারের ফটোরিসেপ্টরের মতো কাজ করে। রেটিনাতে দুধরনের ফটোরিসেপ্টার রয়েছে- শঙ্কু আকারের আর চোঙ আকারের। এই শঙ্কু আকারের ফটোরিসেপ্টার রঙ চিনতে এবং দৃষ্টির প্রখরতার জন্য প্রয়োজনীয়। মুলার গ্লিয়াল কোশকে গবেষণার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে কারণ কিছু প্রাণীতে তাদের পুনরায় সংযুক্ত করার ক্ষমতা রয়েছে। এই গবেষণার চাবিকাঠি ছিল Ikzf1 এবং Ikzf4 জিন এবং যে প্রোটিন তারা তৈরি করে। এই প্রোটিনগুলো টেম্পোরাল আইডেন্টিটি ফ্যাক্টর হিসাবে পরিচিত, যা ইতিমধ্যে বিভিন্ন ধরনের কোশের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই টেম্পোরাল আইডেন্টিটি ফ্যাক্টর, গ্লিয়াল কোশকে পুরোপুরি শঙ্কু কোশে রূপান্তরিত করেনা বরং তারা ফটোরিসেপ্টরগুলোর মতো কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় কিছু বৈশিষ্ট্য গ্রহণ করে থাকে।
দুর্ভাগ্যবশত কৌশলটি মানুষের কোশে কার্যকর নয়। যদিও প্রক্রিয়াটি শুধুমাত্র ইঁদুরের কোশে পরীক্ষা করা হয়েছে, কিন্তু ভবিষ্যতে এর থেকে একটি থেরাপি তৈরি হতে পারে যা মানুষের দৃষ্টি পুনরুদ্ধার করতে পারবে। মন্ট্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নায়ুবিজ্ঞানী ক্যামিল বউড্রেউ-পিনসনউল্ট বলেছেন যে এই মুলার কোশ মাছের রেটিনাকে পুনরায় সক্রিয় এবং পুনরুত্পাদন করতে পারে বলে পরিচিত। কিন্তু মানুষ সহ স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে, তারা সাধারণত এই কাজ করে না, কোনো আঘাত বা রোগের পরেও নয়। এর কারণ অবশ্য এখনও অজানা।