বেশি জল ছাড়াই জীবিকা নির্বাহের কথা উঠলে, মরুভূমিতে বসবাসকারী জীব এ বিষয়ে উদ্ভাবনে সবচেয়ে পারদর্শী। কিছু প্রাণী, যেমন গিলা মনস্টার, তাদের দেহের মধ্যে জল সঞ্চয় করতে পারদর্শী হয়ে উঠেছে। গাছপালাও গভীর শিকড় মাটির নীচে পাঠায় যাতে তারা জল পায়।
কিন্তু একটি শুষ্ক-অভিযোজিত উদ্ভিদ আর্দ্রতা অর্জনের জন্য অন্য এক উৎস ব্যবহার করে, তা হল বায়ু। এথেল টামারিস্ক নামক কাঁটাযুক্ত গুল্ম মাটি থেকে লবণাক্ত জল টেনে নেয় এবং তাদের পাতা থেকে লবণ বের করে যা কেলাস আকারে থাকে। অক্টোবরে প্রসিডিংস অফ ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্সে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র অনুসারে, রাতে, এই কেলাসগুলো তাদের বাতাস থেকে জল সংগ্রহ করতে দেয়। বিজ্ঞানীরা অ্যাথেল টামারিস্ক থেকে একটি ডাল কেটে নিয়ে তাদের ল্যাবে নিয়ে আসেন। তারা এটিকে একটি পরিবেশগতভাবে নিয়ন্ত্রিত চেম্বারে স্থাপন করেছিলেন যেখানে ৯৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট এবং ৮০ শতাংশ আর্দ্রতা সৃষ্টি করে মরুভূমির আবহাওয়া অনুকরণ করা হয়েছিল। দু-ঘন্টা পরে দেখা গিয়েছিল, লবণের কেলাস সহ শাখাটি পাতায়, ১৫ মিলিগ্রাম জল সংগ্রহ করেছে। যখন তারা লবণ ছাড়া একই শাখা পরীক্ষা করেছিল, তখন এটি মাত্র ১.৬ মিলিগ্রাম জল সংগ্রহ করেছিল। দলটি লবণের উপাদানগুলি পরীক্ষা করে দেখেছেন যে এতে কমপক্ষে দশটি ভিন্ন উপাদান রয়েছে, যা একসাথে গাছের পাতাকে বাতাস থেকে জল টানতে সাহায্য করে, এমনকি আর্দ্রতা ৫৫ শতাংশের কম থাকলেও পাতাগুলি জল টানতে পারে। এই উপাদানগুলির মধ্যে লিথিয়াম সালফেট, সর্বনিম্ন আর্দ্রতায় জল সংগ্রহ করতে পারে।
গবেষকরা মনে করছেন, এই লবণ, প্রাকৃতিকভাবে উদ্ভিদ দ্বারা উৎপাদিত হচ্ছে, যা পরিবেশগতভাবে নিরাপদ হতে পারে। তাদের শনাক্ত করে ইঞ্জিনিয়াররা কম জলের অঞ্চলে বাতাস থেকে আর্দ্রতা টেনে নেওয়ার অনুশীলনগুলি উন্নত করতে সহায়তা করতে পারে। ক্লাউড-সিডিং, একটি প্রক্রিয়া যা মেঘের সাথে কেলাস যোগ করে তাদের বৃষ্টি তৈরি করতে প্ররোচিত করে। ইতিমধ্যেই সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর মতো দেশে শুষ্ক অবস্থার সাথে লড়াই করার জন্য এবং পাকিস্তানে ধোঁয়াশা প্রশমিত করার জন্য এটি ব্যবহৃত হয়েছে। গবেষণার লেখক মারিহ আল-হান্দাউই, নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি আবুধাবির একজন রসায়নবিদ বলেছেন, এটি ক্লাউড-সিডিং অনুশীলনগুলিকে আরও কার্যকর এবং পরিবেশ বান্ধব করার প্রতিশ্রুতি দেয়। পাশাপাশি গ্রহের দুষ্প্রাপ্য জলের সংস্থানগুলিকে বুদ্ধিমত্তার সাথে ব্যবহার করার জন্য আমাদের দায়িত্বেশীল হতে হবে।