মঙ্গল গ্রহ সম্বন্ধে এক বিস্ময়কর তথ্য সামনে এসেছে। নেচার পত্রিকায় প্রকাশিত এক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা বলেছেন ইনসাইট ল্যান্ডারের তথ্য অনুসারে, মঙ্গল গ্রহের ঘূর্ণন প্রতি বছর প্রায় ৪ মিলিআর্কসেকেন্ডে ত্বরান্বিত হচ্ছে। যদিও পরিমাণে এটি খুবই ছোটো – মঙ্গল গ্রহের প্রতি বছরে তাই দিনের দৈর্ঘ্য এক মিলিসেকেন্ডের একটি ভগ্নাংশ কমে যাচ্ছে- তবে এর কারণ আজ স্পষ্ট নয়। সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে যে মঙ্গল গ্রহের মেরু ক্যাপগুলিতে বরফ জমা হওয়া বা পোস্ট গ্লেসিয়াল রিবাউন্ড অর্থাৎ বিশাল ভরের বরফ দ্বারা সংকুচিত ভূমি বরফ গলে গেলে আবার ওপরের দিকে প্রসারিত হওয়ার কারণে গ্রহের ঘূর্ণনের গতি বেড়ে যেতে পারে। নাসার বিজ্ঞানীদের মতে, একটি গ্রহের ভরের পরিবর্তন এটিকে কিছুটা ত্বরান্বিত করতে পারে। প্রক্রিয়াটি বোঝার জন্য, বিজ্ঞানীরা ইনসাইটে পাওয়া মঙ্গলগ্রহের প্রথম ৯০০ টি দিনের তথ্য মূল্যায়ন করেছেন। একটি রেডিও ট্রান্সপন্ডার এবং অ্যান্টেনাকে সম্মিলিতভাবে বলা হয়েছে রোটেশন অ্যান্ড ইন্টেরিয়ার স্ট্রাকচার এক্সপেরিমেন্ট বা রাইজ। এই রাইজ ব্যবহার করে, গবেষকরা গ্রহের ঘূর্ণন ত্বরান্বিত হচ্ছে তা নির্ধারণ করতে সক্ষম হয়েছেন। পৃথিবীর বিজ্ঞানীরা নাসার ডিপ স্পেস নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ল্যান্ডারে রেডিও সিগন্যাল পাঠিয়েছেন। রাইজ এই সিগন্যালকে প্রতিফলিত করে। ডপলার শিফ্টে সৃষ্ট কম্পাঙ্কতে ক্ষুদ্র পরিবর্তন সন্ধান করাতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা নির্ধারণ করেন যে গ্রহটি কত দ্রুত ঘুরছে। পৃথিবীতে ঠিক উল্টোটা ঘটছে। সময়ের সাথে সাথে পৃথিবীর ঘূর্ণন কিছুটা ধীর হয়ে আসছে। এর কারণ হল পৃথিবীর ঘূর্ণনের উপর চাঁদের জোয়ারের প্রভাব। কিন্তু মঙ্গল গ্রহে কোনো মহাসাগর নেই, তাই বিজ্ঞানীরা মনে করছেন এর কারণ ভিন্ন আর তাই ত্বরণের সম্ভাব্য কারণ নির্ধারণের জন্য তাদের আরও গভীরভাবে বিশ্লেষণ করতে হবে। বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন তত্ত্ব সামনে আনলেও এখনও স্পষ্ট নয় এই লাল গ্রহটির ঘূর্ণন গতি ত্বরান্বিত হওয়ার কারণ।