এক ধরনের ম্যাজিক আঠার কথা ভাবুন, যা দিয়ে সব জোড়া যায়, তা হাড় জোড়ে, চামড়া জোড়ে এমনকি ভাঙা চেয়ারও জোড়ে আবার এই আঠা জলের নীচেও কার্যকরী থাকে। ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ, ভোপাল, এবং স্কুল অফ মেডিক্যাল অ্যান্ড অ্যালায়েড সায়েন্সেস, হরিয়ানার গবেষকরা এরকম একটা জৈব বিয়োজক আঠা বানিয়েছেন। তারা এর নাম দিয়েছেন A30, যা যন্ত্রণাদায়ক সেলাই বা স্টেপল না করে ক্ষতস্থানের কাটা জায়গা জোড়ে। ভারতীয় গবেষকদের এই গবেষণা কেমিস্ট্রি – অ্যা ইউরোপিয়ান জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
এই গবেষণার পুরোধা ছিলেন ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ- এর আশিস শ্রীবাস্তব ও তন্ময় দত্ত, এবং স্কুল অফ মেডিক্যাল অ্যান্ড অ্যালায়েড সায়েন্সেস -এর আশিস শর্মা। তারা এই আঠার জন্য ভারতীয় পেটেন্ট নিয়েছেন। এই আঠা শুধুমাত্র হাড় জোড়া লাগায় না, এটা ক্ষতস্থানে ওষুধ পৌঁছোতেও সাহায্য করে। এই জৈব বিয়োজক আঠা মানুষের শরীরের পক্ষে সম্পূর্ণ নিরাপদ। ডঃ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন যে সমস্ত পৃষ্ঠদেশে আঠাটি কার্যকর থাকে তা হল, কোশ কলা, হাড়, ডিমের খোসা, কাঠ, এবং এগুলো জলে ও বাতাসে দু জায়গাতেই জোড়া লাগবে। কোনো রকম রাসায়নিক বা ধাতব আয়ন যোগ না করেই এটি নিজে জোড়া লাগায় এবং আস্তে আস্তে ক্ষতস্তানে শক্ত হয়ে আটকে যায়। তারা জানিয়েছেন এর প্রয়োগ ওষুধ শিল্পে, দাঁতের চিকিৎসায়, টিস্যু ইঞ্জিনিয়ারিং, অস্থি চিকিৎসায় বা প্রসাধন সামগ্রীতে হতে পারে। তাছাড়া এই আঠা পরিবেশ বান্ধব প্যাকেজিং অ্যাপ্লিকেশন এবং পণ্যগুলিতেও ব্যবহার করা যেতে পারে, যা বিভিন্ন শিল্পে ভালো অবদান রাখতে পারে বলে আইআইএসইআর ভোপাল আশা প্রকাশ করেছে।