১৯৬৩ সালে প্রত্নতাত্ত্বিকরা সোনা, রূপো, অ্যাম্বার এবং লোহা দিয়ে তৈরি ৫৯টা বোতল, বাটি, গয়নার টুকরো স্পেন থেকে আবিষ্কার করেছিলেন যা ট্রেজার অফ ভিলেনা নামে পরিচিত। যা এখন স্পেনের ভিলেনার প্রত্নত্তাত্বিক মিউজিয়ামে সংরক্ষিত। ব্রোঞ্জ যুগের এই ভাণ্ডারে এমন কিছু ধাতু আছে যা বিশ্বের বাইরে উল্কা থেকে খসে পড়া ধাতু বলে গবেষকরা জানাচ্ছেন। অ্যালিক্যান্টে প্রদেশের নুড়ির গর্তে, গবেষকরা কিছু লোহার টুকরোর মধ্যে অদ্ভুত কিছু লক্ষ্য করেন। সেই সময়ে, তারা বস্তুগুলোকে একটা গাঢ় ভারী ধাতু দিয়ে তৈরি যা কিছু কিছু স্থানে চকচকে, আবার কোথাও লৌহঘটিত অক্সাইড দিয়ে আবৃত যেখানে নানা ফাটল আছে বলে বর্ণনা করেছিলেন। ট্রাবাজোস ডি প্রিহিস্টোরিয়া জার্নালে প্রকাশিত একটি অনুবাদিত গবেষণায় প্রকাশ দুটো শিল্পকর্মে ব্যবহৃত লোহা একটা উল্কাপিণ্ড থেকে উদ্ভূত হয়েছিল যা প্রায় ১ মিলিয়ন বছর আগে পৃথিবীতে পড়েছিল। গবেষকরা দুটো লোহার টুকরা পরীক্ষা করেছেন, একটা সি-আকৃতির ব্রেসলেট আর তরবারির হাতলের ওপরে একটা ফাঁপা গোলক যার ওপরে সোনার পাত বসানো ছিল। এগুলো খ্রিস্টপূর্বাব্দ ১৪০০-১২০০ -এর মধ্যে তৈরি করা হয়েছিল। ভর স্পেকট্রোমেট্রি যা অণুর ভর-থেকে-চার্জের অনুপাত পরিমাপ করে তা ব্যবহার করে, গবেষকরা লোহা-নিকেল সংকর পরিমাপ করে দেখেন তা উল্কা থেকে প্রাপ্ত লোহার সাথে তুলনীয়। লৌহপ্রযুক্তি তামা-ঘটিত ধাতুবিদ্যা ও সোনা রূপোর ধাতুবিদ্যা থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। যারা উল্কা থেকে লোহা এবং পরে পৃথিবীতে প্রাপ্ত লোহার নিয়ে কাজ শুরু করেছিলেন তাদের অবশ্যই নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে হয়েছিল।
কারা কোথা থেকে এই লোহা ব্যবহার করেছিল তা জানা না গেলেও গবেষণা অনুসারে, ইবেরিয়ান উপদ্বীপে পাওয়া উল্কা থেকে প্রাপ্ত বস্তুগুলিই প্রথম এবং প্রাচীনতম লোহার বস্তু। স্পেনের ইতিহাস ইনস্টিটিউটের গবেষক অধ্যয়নের সিনিয়র লেখক ইগনাসিও মন্টেরো রুইজ বলেছেন, সোনা এবং লোহার মধ্যে সংযোগ গুরুত্বপূর্ণ, কারণ উভয় উপাদানের প্রতীকী এবং সামাজিক মূল্য রয়েছে। গবেষকরা জানিয়েছেন, কীভাবে কৌতূহল পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে আমাদের প্রাচীন সমাজ নানা উদ্ভাবনী কৌশল আবিষ্কার করেছিল তা জানতে পারা বেশ আকর্ষণীয় বিষয়।