আমরা নিজের স্মৃতিশক্তি নিয়ে বেশ ওয়াকিবহাল। কীভাবে স্মৃতি বাড়বে, আমরা নানা পড়া কীভাবে মনে রাখব তার জন্য নান টনিক, ওষুধ এসবও বাজারে পাওয়া যায়, তাদের কার্যকারিতা কতটা বিশেষ জানা নেই। কিন্তু প্রকৃতির রাজ্যে কীট পতঙ্গের ক্ষেত্রে এই কাজ করছে এক ব্যাকটেরিয়া। এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া প্রাকৃতিকভাবে ৭০ শতাংশ কীটপতঙ্গের প্রজাতির মধ্যে পাওয়া যায়। গবেষণায় দেখা গেছে তাদের উপস্থিতি কিছু কিছু ক্ষেত্রে পতঙ্গের শেখা ও স্মৃতিশক্তি বাড়াতে পারে। ১৯২৪ সালে প্রথম চীনের গবেষকরা, ড্রসোফিলা বা ফলের মাছির মধ্যে ওলব্যাচিয়া নামে এক ব্যাকটেরিয়ার নির্দিষ্ট স্ট্রনের সংক্রমণ শনাক্ত করেছিলেন। বর্তমান গবেষণায় ফলের মাছির ঘ্রাণ পরীক্ষায় দেখা গেছে ওলব্যাচিয়া দ্বারা সংক্রামিত মাছিরা অসংক্রামিত মাছিদের তুলনায় পুরস্কারের সাথে যুক্ত নির্দিষ্ট গন্ধ ভালোভাবে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে।
কিছু ওলব্যাচিয়া স্ট্রেন পোষক কীটপতঙ্গের মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রকে সংক্রামিত করতে পারে। গবেষণায় এও দেখা গেছে ওলব্যাচিয়া দ্বারা সংক্রামিত পুরুষ মাছি অসংক্রামিত পুরুষ মাছির তুলনায় বেশি প্রতিযোগিতামূলক মনোভাবাপন্ন হয় আর এই ব্যাকটেরিয়া মাছিদের ঘুমকেও প্রভাবিত করে। অন্যান্য সম্ভাব্য প্রভাব জানতে সেন্ট্রাল চায়না নরমাল ইউনিভার্সিটির জীববিজ্ঞানী মেং-ইয়ান চেন এবং সহকর্মীরা ডাব্লুমেলপপ নামক ওলব্যাচিয়ার স্ট্রেন দিয়ে ড্রোসোফিলা মেলানোগাস্টার-কে সংক্রামিত করে অসংক্রমিত মাছিদের তুলনায় তাদের স্মৃতিশক্তি পরীক্ষা করেছিলেন। পূর্বে অন্যান্য গবেষণায় জানা গেছে ডাব্লুমেলপপ একটা শক্তিশালী ডেঙ্গু প্রতিরোধী স্ট্রেন, আর এর সংক্রমণে মশার খেতে অসুবিধা হয় ফলে তাদের জীবনকাল হ্রাস পায়। তাদের স্নায়ুতন্ত্রে এই নেতিবাচক প্রভাব দেখে গবেষকরা ভেবেছিলেন ফলের মাছির ক্ষেত্রেও শেখা ও স্মৃতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। কিন্তু পরীক্ষায় দেখা গেছে এই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে ফলের মাছির স্বল্পকালীন স্মৃতি ও দীর্ঘকালীন স্মৃতি উভয়ের উন্নতির সাথে যুক্ত। এই গবেষণা অ্যানিম্যাল বিহেভিয়ারে প্রকাশিত হয়েছে।