সৌরজগতের সবচেয়ে বড়ো গ্রহ বৃহস্পতি। আর এই বৃহস্পতিকে নিয়ে মহাকাশ বিজ্ঞানীদের মধ্যেও তাই কৌতূহলের শেষ নেই। এই গ্রহকে নজরে রাখতে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা, নাসা, থেকে যে মহাকাশযানটি পাঠানো হয়েছে, তার নাম জুনো। বৃহস্পতি সাধারণ ভাবে হাইড্রোজেন এবং হিলিয়াম গ্যাস দ্বারা গঠিত। সূর্য থেকে এই গ্রহের দূরত্ব ৮৮,৮৫০ মাইল। ২০১৬ সাল থেকে এই গ্রহের চারপাশে ঘুরছে নাসার মহাকাশযান জুনো। সম্প্রতি বৃহস্পতির চার পাশে চক্কর কাটছিল মহাকাশযানটি। এই বছরের শুরুতে বৃহস্পতির খুব কাছ দিয়ে যাওয়ার সময় মহাকাশযানটি বৃহস্পতির রহস্যময় পঞ্চম চাঁদটি দেখেছে। বৃহস্পতির সবচেয়ে বিখ্যাত চাঁদগুলোর মধ্যে রয়েছে চারটি গ্যালিলিয়ান উপগ্রহ: আইও, ইউরোপা, গ্যানিমিড এবং ক্যালিস্টো। বৃহস্পতির পঞ্চম চাঁদটি, ১৮৯২ সালে এডওয়ার্ড এমারসন বার্নার্ড প্রথম আবিষ্কার করেন। তার নাম দেওয়া হয় অ্যামালথিয়া। নাসার গবেষকরা এই ছোটো কিন্তু আকর্ষণীয় প্রাকৃতিক উপগ্রহটির একটি বিরল দৃশ্য দেখতে পান জুনো মহাকাশযানের দৌলতে। বৃহস্পতির বিশাল লাল বিন্দু যা গ্রেট রেড স্পট নামে পরিচিত এবং তার রঙিন বলয় এবং ঘূর্ণায়মান ঝড়েরও দেখা পান তারা। নাসার প্রকাশিত ছবিগুলোতে, বৃহস্পতির লালচে, গাঢ় মেঘের বলয়ের উপর অ্যামালথিয়া একটি ছোটো বিন্দুর মতো দেখাচ্ছিল৷ গ্রেট রেড স্পটের পাশ দিয়ে চাঁদকে যেতেও দেখতে পায় জুনো। যে সময়ে এই দুটি চিত্রের প্রথমটি নেওয়া হয়েছিল, তখন জুনো মহাকাশযানটি বৃহস্পতির মেঘের শীর্ষ থেকে প্রায় ২৬৫,০০০ কিলোমিটার উপরে ছিল। নাসার মতে, অ্যামালথিয়ার আকৃতি অনেকটা আলুর মতো। নিজেকে একটি গোলকের মধ্যে টেনে নেওয়ার মতো ভরের অভাব রয়েছে তার। এটি লো-এর কক্ষপথের অভ্যন্তরে বিশালাকার গ্রহটিকে প্রদক্ষিণ করে। একটি কক্ষপথ সম্পূর্ণ করতে সে প্রায় ০.৪৯৮ পৃথিবী দিন সময় নেয়। অ্যামালথিয়া সৌরজগতের সবচেয়ে লাল বস্তু। অ্যামালথিয়াকে ঘিরে রহস্যের শেষ নেই। বিজ্ঞানীরা মনে করে যে এটি সূর্য থেকে প্রাপ্ত তাপের চেয়ে একটু বেশি তাপ নির্গত করে। গবেষকরা এর পরিপ্রেক্ষিতে বেশ কয়েকটি তত্ত্ব সামনে রেখেছে। একটি তত্ত্ব অনুসারে আমালথিয়া বৃহস্পতি থেকে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে তাপ গ্রহণ করে। তাছাড়াও, বৃহস্পতি তার চাঁদকে খুব জোরে আঁকড়ে রাখে। ফলত জোয়ারের প্রভাবেও তাপ উৎপন্ন হতে পারে।