বৃহস্পতি হল সূর্যের পর সমগ্র সৌরজগতের দ্বিতীয় বৃহত্তম বস্তু। পৃথিবী থেকে এর দূরত্ব ৪ জ্যোতির্বিদ্যা ইউনিটের কম। এই বিশাল গ্রহের বায়ুমণ্ডল দেখার জন্য নানা গবেষণা চলছে, কারণ বৃহস্পতির ঝড় খুবই আলোচ্য। গবেষকরা বিভিন্ন টেলিস্কোপের সাহায্যে বৃহস্পতির ঝড়ো মেঘে এমন বৈশিষ্ট্য খুঁজে পেয়েছেন যা আগে কখনও দেখা যায়নি। বিজ্ঞানীরা একটি উচ্চ-গতির বাতাসের জেটস্ট্রিম আবিষ্কার করেছেন, যা প্রায় ৪৮০০ কিলোমিটার চওড়া, যা মেঘের স্তরের উপরে এই গ্রহের বিষুবরেখার চারপাশে আঘাত করে। ইনফ্রারেড জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (জেডব্লিউএসটি) ব্যবহার করে করা এই আবিষ্কার বৃহস্পতির আবহাওয়ার অদ্ভুত গতিশীলতার দিকে বিজ্ঞানীদের কিছু অন্তর্দৃষ্টি দিতে পারে।
বৃহস্পতির বায়ুমণ্ডল বেশ আশ্চর্যজনক, এর আলো এবং অন্ধকার মেঘের ব্যান্ড পরপর অবস্থিত, যা যথাক্রমে জোন এবং বেল্ট নামে পরিচিত, এই ব্যান্ডগুলো শুধুমাত্র বৃহস্পতির চারপাশে বিভিন্ন উচ্চতায় ঘোরে না, তারা বিপরীত দিকেও ভ্রমণ করে। বিজ্ঞানীরা সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিত নন যে কেন এভাবে ব্যান্ডগুলো সজ্জিত থাকে। বৃহস্পতির অরোরা সৌরজগতে সবচেয়ে শক্তিশালী কারণ তারা অতিবেগুনী আলোতে জ্বলে।
পূর্বে শুধুমাত্র এক ধরণের অস্পষ্ট ধোঁয়া হিসাবে বৃহস্পতির দৃশ্যমান অঞ্চল, এখন পর্যন্ত নির্মিত সবচেয়ে শক্তিশালী ইনফ্রারেড JWST টেলিস্কোপ, যা ইনফ্রারেড দিয়ে দেখিয়েছে, মেঘের শীর্ষের উপরে ২৫ থেকে ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে শক্তিশালী বাতাসের স্রোত প্রতি ঘন্টায় ৫১৫ কিলোমিটার গতিতে বৃহস্পতির বিষুবীয় অঞ্চলের চারপাশে চাবুকের মতো ঘুরছে। গবেষকরা হাবল টেলিস্কোপ পর্যবেক্ষণ ডেটা থেকে নিম্ন মেঘের স্তরের তুলনা করেছেন, এটি জেটস্ট্রিমের অর্ধেক গতিতে ভ্রমণ করে। গবেষকরা বলছেন, বৃহস্পতির বিষুবীয় বায়ুর গতি উচ্চতার সাথে পরিবর্তিত হয়। ছোটো আকারের ঝড় যেগুলো বিভিন্ন বাতাসের গতির সংমিশ্রণে ঘূর্ণনের মধ্যে উপস্থিত হয়, আবার অদৃশ্য হয়ে যায়, সেগুলো উল্লম্ব ভাবে অবস্থান করে। নেচার অ্যাস্ট্রোনমিতে প্রকাশিত গবেষণায় বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন বৃহস্পতি গ্রহের নিরক্ষীয় স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে বায়ু এবং তাপমাত্রার জটিল কিন্তু পুনরাবৃত্তিযোগ্য প্যাটার্ন রয়েছে।