কেমন হয় যদি আপনার বাড়ির উদ্ভিদ বলতে পারে যে আপনার খাওয়ার জল নিরাপদ কিনা? এর জন্য ইউ সি রিভারসাইড-এর গবেষকরা একটা উদ্ভিদকে সফলভাবে প্রকৌশলী করেছেন যাতে তা নিষিদ্ধ, বিষাক্ত কীটনাশকের উপস্থিতিতে বীটের মতো লাল রঙ ধারণ করে। যে রঙ জলে বিষাক্ত রাসায়নিকের উপস্থিতি জানান দেবে। উদ্ভিদের স্বাভাবিক বিপাকে পরিবর্তন না করেই এই ধরনের পরিবেশগত সেন্সর তৈরি করেছেন বলে জানিয়েছেন ইউ সি রিভারসাইড-এর রাসায়নিক ও পরিবেশগত প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ইয়ান হুইলডন৷ পূর্বে এই ধরনের বায়োসেন্সর উপাদান উদ্ভিদকে আলোর দিকে বাড়তে বা খরার সময় তাদের জল না ব্যবহার করার ক্ষমতাকে নষ্ট করে দিত, এখানে তা হবে না। নেচার কেমিক্যাল বায়োলজি জার্নালে এই গবেষণার রাসায়নিক বিবরণ বিস্তারিতভাবে দেওয়া হয়েছে। এই প্রকৌশল প্রক্রিয়া অ্যাবসিসিক অ্যাসিড বা ABA নামক প্রোটিন থেকে হয়।
খরার সময়, মাটি শুকিয়ে গেলে গাছপালা ABA উৎপন্ন করে। এর উপস্থিতিতে উদ্ভিদ তার পাতা এবং কান্ডের ছিদ্র বন্ধ করে দেয় যাতে জল কম বাষ্পীভূত হয় এবং গাছের শুকিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। ABA রিসেপ্টর প্রোটিনকে ABA ছাড়া অন্য রাসায়নিকের সাথে আবদ্ধ হওয়ার জন্য প্রকৌশল করা হয়েছিল। গবেষকরা দেখিয়েছেন এই রিসেপ্টরগুলো অন্য রাসায়নিকের সাথে আবদ্ধ হয়ে গেলে, উদ্ভিদের রঙ বীটের মতো লাল হয়ে যাবে।
পরীক্ষাতে গবেষকরা অ্যাজিনফস-ইথাইল নামে এক কীটনাশক ব্যবহার করেছেন, যা মানুষের জন্য বিষাক্ত হওয়াতে তা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এই কীটনাশকযুক্ত জল গাছ শোষণ করলে তা লাল হয়ে যায়, যা দূর থেকেই শনাক্ত করা যায়। গবেষকরা ইস্টকেও বায়োসেন্সরে পরিবর্তন করার জন্য পরীক্ষা করে দেখেছেন, তা দুধরনের রাসায়নিকে একইসাথে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। একটা উদ্ভিদকে সেন্সর বানিয়ে যদি এরকম নানা নিষিদ্ধ কীটনাশকে প্রতিক্রিয়া জানাতে ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে তা আদর্শ হয়। তবে এর অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। তাছাড়া এধরনের গাছ চাষের জন্য অনুমতি লাগে। তবে পরিবেশে নানা রাসায়নিকের উপস্থিতি শনাক্ত করার জন্য গবেষকরা উদ্ভিদ নিয়ে এই গবেষণা চালাচ্ছেন।