ভাইরাস- পৃথিবীর মধ্যে সর্বাধিক সংখ্যক জৈবিক অস্তিত্ব যা সম্মিলিতভাবে প্রতিটি ধরনের জীবনকে সংক্রামিত করে। ভাইরাস অত্যন্ত বৈচিত্র্যপূর্ণ, তাদের পোষক কোশকে শোষণ করার জন্য তারা বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করে। এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকার অর্থ হল ভাইরাসের সাথে লড়াই করা।
এককোশী জীবাণুর জিনোম বিশ্লেষণ করতে গিয়ে গবেষকরা ভাইরাস সংক্রান্ত এক চমকপ্রদ তথ্য আবিষ্কার করেছেন। হাজার হাজার ভাইরাস, যাদের সম্বন্ধে কেউই অবগত ছিল না তারা এই এককোশী জীবাণুর ডিএনএর মধ্যে “লুকিয়ে” ছিল। বিভিন্ন এককোশী জীবাণুর জেনেটিক উপাদান বা জিনোমে গবেষকরা প্রায় ৩০,০০০ নতুন ধরনের ভাইরাস খুঁজে পেয়েছেন। তারা বলেন যে ভাইরাল ডিএনএ একটি পোষক কোশকে দিয়ে কার্যক্ষম ভাইরাসের প্রতিলিপি তৈরি করতে সক্ষম।
অস্ট্রিয়ার ইনসব্রুক ইউনিভার্সিটির ভাইরাস নিয়ে অধ্যয়নরত বাস্তুবিদ ক্রিস্টোফার বেলাসের বক্তব্য অনুযায়ী তারা খুবই অবাক হয়েছেন যে এই বিশ্লেষণের মাধ্যমে এত নতুন নতুন ভাইরাস খুঁজে পাওয়া গেছে এবং কিছু ক্ষেত্রে দেখা গেছে, একটি জীবাণুর ডিএনএর প্রায় ১০ শতাংশ জুড়ে ভাইরাস লুকিয়ে রয়েছে। তবে এই ভাইরাসগুলো তাদের পোষককে অসুস্থ করে না বরং তারা উপকারী হিসেবে প্রতিপন্ন হতে পারে। কিছু নতুন ধরনের ভাইরাস দেখা গেছে যা অনেকটা ভাইরোফেজের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। ভাইরোফেজ হল এক ধরনের ভাইরাস যা পোষক কোশ সংক্রামিত করা অন্যান্য সংক্রমণকারী ভাইরাসকে সংক্রামিত করে। বেলাসের মতে কেন জীবাণুর জিনোমে এতগুলি ভাইরাস পাওয়া যায় তা এখনও স্পষ্ট নয়। তিনি মনে করেন যে ভাইরাসগুলো কোশকে বিপজ্জনক ভাইরাসের হাত থেকে রক্ষা করে।
ভাইরাস জীবিত কিনা তা নিয়ে বিতর্ক না গিয়ে যেটা বলা যায় যে ভাইরাস অন্যান্য জীবিত প্রাণীর মধ্যে প্রবেশ করে, কোনো কোনো ভাইরাস পোষক কোশের ডিএনএ-র সাথে যুক্ত হয় ও তাদের জিনোমের অংশ হয়ে প্রতিলিপি তৈরি করে।