মনস্টার শুনলেই আমাদের মাথায় আসে দানবীয় কোনও শক্তিশালী প্রাণীর কথা। বলবিক্রমে এখনকার সুপারহিরোদের টক্কর দিতে পারবে, এমন সব জন্তু। কিন্তু যদি বলা হয়, ৩০০ মিলিয়ন বছর আগে পৃথিবী জুড়ে দাপিয়ে বেড়িয়েছে যে ‘টুলি মনস্টার’ তার শিরদাঁড়া নেই? একটু অবাক তো হওয়ারই কথা।
১৯৫০ সাল নাগাদ টুলিমন্সট্রাম গ্রেগারিয়ামের জীবাশ্ম আবিষ্কারের পর থেকেই এই সুবিশাল প্রাণীকে নিয়ে গবেষকদের ধন্দের শুরু। আমেরিকার ইলিনয়েসে ফ্রান্সিস টুলি নামের এক সখের জীবাশ্ম আবিষ্কারক নাটকীয়ভাবে এটা আবিষ্কার করেছিলেন ১৯৫৮-তে। তারপর ওই একই অঞ্চল থেকে একশোটার বেশি নমুনা আবিষ্কৃত হয়েছে এতদিনে।
ঠিক কোন সময়টায় এই দানবের রাজত্ব ছিল? কার্বনিফেরাস যুগের পেনসিলভানিয়ান উপযুগে। অর্থাৎ, ৩১৮-২৯৯ মিলিয়ন বছর আগে। ওই সময়টাতেই পৃথিবীতে প্রথম সরীসৃপদের উদ্ভব হয়েছিল। যদিও, এই যুগের জৈব পদার্থের ভাণ্ডার বর্তমানে জীবাশ্ম জ্বালানি হিসেবেই ব্যবহৃত হয়।
প্রথম দিকে দাবি করা হত, টুলি মনস্টার হয়তো মেরুদণ্ডীদের দলের সদস্য। এই তত্ত্বে যেসব জীবাশ্মবিদ বিশ্বাস করতেন, তাঁদের ধারনা ছিল টুলি বিবর্তনের পথে কোনও এক বিশেষ মিসিং লিঙ্ক, সাইক্লোস্টোম গোত্রের ল্যাম্প্রে বা হ্যাগফিশের মতো কোনও চোয়ালহীন মাছ। কিন্তু জাপানের বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি এক্সরে টোমোগ্রাফির সাহায্যে টুলি মনস্টারের দেহের বিভিন্ন প্রস্থচ্ছেদ খতিয়ে দেখেছেন। তাঁরা সদর্থক ভাবেই বলছেন, শরীরের ভেতরে কোনও কঙ্কালের চিহ্নমাত্র নেই। অর্থাৎ, ভীষণদর্শন এই জলচরের মেরুদণ্ড ছিল না।