সূর্যের চরিত্র বদল ঘটেছে বেশ কিছু বছর থেকে। মাঝে মধ্যেই ক্ষোভের আগুন প্লাজমা পরিধি ছেড়ে সৌরমণ্ডলে এসে পড়ছে। কিন্তু এবার যেন ফুঁসছেই নক্ষত্রমণ্ডলের অধিপতি। বিজ্ঞানীরা বলছে এই ঝড়ে সাথে বিপুল পরিমান সৌর কণা প্রতি সেকেন্ডে ১৬০০ কিলোমিটার বেগে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা কয়েক মাস আগেই পূর্বাভাস দিয়েছিলেন, এক শক্তিশালী সৌর ঝড় আছড়ে পড়তে চলেছে পৃথিবীর উপর। তাঁরা বুঝতে পারছিলেন, নিয়মমাফিক সূর্য ততক্ষণে বেশ চঞ্চল হয়ে উঠেছে।
আর সেই সঙ্গে সূর্যের ভিতর বিস্ফোরণ ঘটার মতো পরিবেশও তৈরি হতে শুরু করেছে। গত কয়েকবছরের মধ্যে বৃদ্ধি পেয়েছে সানস্পট, যা নিয়ে বিজ্ঞানীদের বাড়ছে চিন্তা। সৌর ঝড় থেকে সৃষ্টি হয়ে ছুটে আসা সৌর কণা বা মহাজাগতিক রশ্মি প্রাণীদের পক্ষে বিপদ বাড়িয়ে তোলে। যদি ঝাঁকে ঝাঁকে বায়ুমণ্ডল ভেদ করে পৃথিবী পৃষ্ঠে নেমে আসে, তবে নিমেষের মধ্যেই বিনাশ ঘটতে পারে প্রাণী জগতের। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এমন ঘটার কোনও সম্ভাবনা নেই।
কারণ ভূ-চৌম্বকের প্রভাবে পৃথিবীকে বেষ্টন করে তৈরি হয়েছে অদৃশ্য ‘ভ্যান অ্যালেন রেডিয়েশন বেল্ট’। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা যাকে ‘পৃথিবীর রক্ষা কবচ’ বলে মেনে নিয়েছেন। সৌর ঝড়ের সময় অধিক পরিমাণে এক্স-১ প্রকৃতির সৌরকণা নির্গত হয়েছে বলে দাবি করছেন নাসার জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। স্পেস ডট কম সূত্রে জানা গেছে, এই সৌরকণা ধরা দিয়েছে নাসার সোলার ডাইনামিকস অবজারভেটরি সিস্টেমে।
ক্রমাগত আছড়ে পড়া কণার প্রভাবে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয় কৃত্রিম উপগ্রহে। ফলে স্যাটেলাইটের উপর নির্ভরশীল যে কোনও যোগাযোগ ব্যবস্থায় সাময়িক বিঘ্ন ঘটে সৌর ঝড়-এর সময়। ন্যাশনাল ওসানিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন-এর মহাকাশ ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী, সূর্যের পৃষ্ঠে একটা নতুন ভূচৌম্বকীয় ঝড়ের দেখা মিলেছে। তার প্রভাব আমাদের পৃথিবীতে জনজীবনের ওপরে পড়তে পারে।