একটা অদ্ভুত দেখতে পরজীবী উদ্ভিদ অনেকটা পেঁচার মতো আকৃতির, এবছর সেরা ফটো হিসেবে ‘উদ্ভিদ ও ছত্রাক’ বিভাগে বিশ্বব্যাপী ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতায় জিতেছে৷ ফটোতে দেখা যাচ্ছে অন্ধকার মাটিতে বাসা বেঁধে থাকা, এই “পেঁচা” যেন পান্নার মতো জ্বলছে। ফটোগ্রাফার চাত্রি লের্টসিন্টানাকর্ন থাইল্যান্ডের একটি নির্জন বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে যেখানে গাছের গোড়ায় মাটি থেকে ছোট ছোট উদ্ভিদের ফুল ফুটেছে সেখানে এই ছবি তুলেছেন।
থিসমিয়া থাইথোঙ্গিয়ানা নামের এই উদ্ভিদ মাইকো-হেটারোট্রফিক প্রজাতির, অর্থাৎ এরা সালোকসংশ্লেষণ না করে ছত্রাক থেকে তাদের প্রয়োজনীয় শক্তি এবং পুষ্টি গ্রহণ করে পরজীবীর মতো আচরণ করে। এই গাছের শিকড়ের সাথে ছত্রাক যুক্ত থাকে। বিজ্ঞানীরা প্রথম এই গাছ ২০১৮ সালে থাইল্যান্ডের দোই হুয়া মট পর্বতমালায় আবিষ্কার করেছিলেন। এখনও অবধি এই উদ্ভিদ সম্পর্কে খুব কমই জানা গেছে, তবে অদ্ভুত আকৃতির দেহের কারণে থাইল্যান্ডের ভাষায় এদের নাম দেওয়া হয়েছে “ফিসাওং তা নক হুক”, যার অর্থ হল “রহস্যময় পেঁচার চোখ”। এই গাছ তার জীবনচক্রের বেশিরভাগ সময় মাটির নীচে কাটায়, যখন এর ফুল হয় তখন মাটি ফুঁড়ে ওপরে এটা বেরিয়ে আসে। এর ফুলের আকৃতি খুব ছোটো, এগুলো মাত্র ২-৮ মিলিমিটার মাপের হয়ে থাকে। মাটিতে বড়ো গাছের গোড়ায় থাকা ছত্রাক গাছকে মাটি থেকে কিছু খনিজ পদার্থ সরবরাহ করে যার পরিবর্তে তারা গাছ থেকে শর্করা পায়। টি. থাইথোঙ্গিয়ানা গাছ ও ছত্রাকের এই মিথোজীবী সম্পর্কের মধ্যে ঢুকে গিয়ে নিজের প্রয়োজনীয় পুষ্টি চুরি করে নেয়।
ওয়ার্ল্ড নেচার ফটোগ্রাফি পুরস্কারে ‘উদ্ভিদ ও ছত্রাক’ বিভাগে লের্টসিন্টানাকর্নের ছবিটি প্রথম পুরস্কার, গোল্ডেন প্রাইজ জিতেছে। ২০২০ সালে প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতার এটা পঞ্চম বছর, এই বছর ৩০০০টার বেশি চিত্র প্রতিযোগিতায় স্থান পেয়েছিল।