জল ভরা বুক নিয়ে উত্তপ্ত পৃথিবীর দুই প্রান্তে পাহারাদার দুটি বরফের সাম্রাজ্য- সুমেরু আর কুমেরু। সেখানে বরফ গলছে বড় দ্রুত। বারোহাজার বছর আগে শেষ হয়েছিল বরফ যুগ। তখনই তৈরী হয়েছিল মাইলের পর মাইল জোড়া বরফের প্রাচীর, দুই মেরুতে। মরু ভল্লুকের আপন দেশে মাইলের পর মাইল জুড়ে ছড়িয়ে থাকা এই বরফের চাঙড়গুলো পৃথিবীকে ঠাণ্ডা রাখার কাজ করে। এরা যদি অস্থির হয়ে গলতে থাকে তাহলে শুধু যে সমুদ্রের জলস্তর বাড়ে তাই নয়, তৈরী হতে থাকে নতুন নতুন হিমবাহ। একসময় তারাও গলতে থাকে। এই মুহুর্তে পৃথিবীতে তাই ঘটছে।
২৩ শে এপ্রিলের ‘নেচার কমিউনিকেশন’ পত্রিকায় প্রকাশিত গবেষণা পত্রে দেখা গেছে কিভাবে কুমেরুর সব থেকে শক্ত বরফ পুঞ্জ, যার নাম ‘রস’ বরফ প্রাচীর- তা গলছে দ্রুত। কুমেরুর দক্ষিণ পশ্চিম অংশে বসে থাকা এই কয়েকশো কিলোমিটার লম্বা এলাকাজোড়া বরফসাম্রাজ্য আমাদের নিউজিল্যান্ডের কাছাকাছি। তারা গলছে যে গতিতে তাতে মহাসাগরের জলস্তর উঠতে থাকছে, এর মধ্যে গত কয়েক বছরে উঠেছে প্রায় দু-মিটার। বড়ই শঙ্কার কথা। ডুবতে পারে অনেক শহর। সামুদ্রিক প্রাণীজগতেও আসবে বিপুল পরিবর্তন। কয়লা পোড়ানো, গাছ কাটা, জঙ্গল তাড়িয়ে সারা পৃথিবীকে মানুষ যেভাবে নিজের অজ্ঞাতে এবং প্রকৃতি লুন্ঠনের নেশায় অবাস যোগ্য করে তুলছে, তাতে অচিরেই বড় বিপদ এসে পড়তে পারে।