প্রায় ১৫,০০০ বছর আগে এখন আমরা যাকে মরক্কো বলি সেখানে প্রাক-কৃষি যুগে বসবাসকারী মানুষরা শিকার করে তাদের খাদ্য সংগ্রহ করত। পূর্বে মনে করা হত তাদের খাদ্যতালিকায় মূলত প্রাণীজ প্রোটিন থাকত কিন্তু তাদের দাঁত এবং হাড়ের গঠন প্রকাশ করে যে তারা আসলে উদ্ভিদভিত্তিক খাবারের উপর নির্ভর করত। এমন কথাই জানাচ্ছে জার্মানির ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর ইভোল্যুশনারি অ্যানথ্রোপলজির গবেষক দল।
পূর্বে এটা অনুমান করা হয়েছিল যে কৃষি কাজের উত্থানের আগে, প্রাচীনযুগে মানুষ প্রচুর মাংস এবং প্রাণীজ দ্রব্য খেত কারণ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলোতে বহু প্রাণীর অবশেষ পাওয়া গেছে যা প্রমাণ করে যে সে যুগে মানুষ খাদ্যের জন্য প্রাণীদের উপর নির্ভর করত। যেহেতু সহস্র বছর ধরে উদ্ভিদের অংশ অক্ষত থাকার সম্ভাবনা কম, তাই এটা অজানা যে প্রাচীন যুগে মানুষ খাদ্যের জন্য কতটা গাছের শিকড়, ফল, কান্ড, ফুল এবং পাতার উপর নির্ভর করত। তবে গবেষকরা সৌভাগ্যক্রমে তাদের খাদ্যের কিছু চিহ্ন এখনও পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম বিশেষ করে, বিভিন্ন আইসোটোপের অনুপাত তাদের খাদ্যবস্তুর প্রকৃতি সম্পর্কে বিশদ বিবরণ রেকর্ড করে। আমরা জানি গাছ তার বৃদ্ধির সাথে সাথে মাটি থেকে আইসোটোপের স্বতন্ত্র সংমিশ্রণগুলো গ্রহণ করে। যখন এই উদ্ভিদ মানুষ খায় তখন সেই আইসোটোপগুলো মানুষের হাড় এবং দাঁতে ক্যালসিয়ামের একটি ছোটো অংশ প্রতিস্থাপন করে, এবং সংমিশ্রণটিকে একটি স্বাক্ষর অনুপাত হিসাবে সংরক্ষণ করে। গবেষকরা ১৭ জন ব্যক্তির থেকে ২৫টি দাঁত এবং সাতটি হাড়ের নমুনা পরীক্ষা করেছেন এবং দাঁতের এনামেলে জিঙ্ক এবং স্ট্রনসিয়াম, হাড়ের কোলাজেনে কার্বন এবং নাইট্রোজেনের অনুপাত এবং পরীক্ষার স্থান থেকে উদ্ধার করা মানুষ ও প্রাণী উভয়ের হাড় থেকে অ্যামিনো অ্যাসিডের অনুপাত অধ্যয়ন করেছেন। তারা খাদ্য হিসেবে উদ্ভিদের ব্যবহারের উল্লেখযোগ্য প্রমাণ খুঁজে পেয়েছেন। নেচার ইকোলজি অ্যান্ড ইভোলিউশনে প্রকাশিত এই গবেষণা অনুসারে মরক্কোর তাফোরাল্ট অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষেরা খাদ্যের জন্য উদ্ভিদের উপর নির্ভর করত। আইসোটোপিক ডেটা থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে তারা প্রাণীজ খাবারের উপর কম নির্ভরশীল ছিল।