বিজ্ঞানীরা পিঁপড়ের ১১,০০০-এরও বেশি ছবি তুলেছেন, জানতে চেয়েছেন কীভাবে তাদের মুখের বিভিন্ন প্যাটার্ন এবং টেক্সচার একটি প্রজাতি হিসাবে তাদের বেঁচে থাকার রহস্য হতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়ার কেনেসাউ স্টেট ইউনিভার্সিটির পতঙ্গবিদ ক্লিন্ট পেনিক এবং তার ছাত্ররা এই গবেষণাটি করেছেন। তারা ১১০০০-এরও বেশি ধরনের পিঁপড়ের ছবি থেকে বোঝার চেষ্টা করেছেন যে কীভাবে এই ক্ষুদ্র প্রাণীদের মুখের উপর পাওয়া জটিল গঠন এবং নিদর্শনগুলো তাদের বেঁচে থাকার জন্য ব্যবহারিক সুবিধা প্রদান করে। ক্রিটেসিয়াস পিরিয়ডের শুরুতে প্রায় ১৬০ মিলিয়ন থেকে ১৪০ মিলিয়ন বছর আগে পিঁপড়েদের প্রথম আবির্ভাব হওয়ার পর থেকে, তাদের বিভিন্ন মুখের টেক্সচার দেখা দিয়েছে, আবার তা অদৃশ্য হয়ে গেছে এবং কখনও কখনও আবার সেই গঠন দেখা গেছে। সায়েন্স নিউজের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, পিঁপড়ের মুখগুলো এতই বিশদ এবং বৈচিত্র্যময় যে বিজ্ঞানীরা তাদের প্রজাতির মধ্যে মুখের বিভিন্ন বিবরণ এবং সূক্ষ্ম পার্থক্য বর্ণনা করার জন্য ১৫০টিরও বেশি পরিভাষা তৈরি করেছেন। বেশিরভাগ পিঁপড়ের বাইরের পৃষ্ঠটি মসৃণ থাকে, ইংরেজিতে যাকে বলে “কিউটিকল”। পেনিকের মতে কিছু পিঁপড়ের ভিন্ন ভিন্ন প্যাটার্ন থাকে, যেমন জায়গায় জায়গায় তোবড়ানো গল্ফ বলের মতো ছোটো ছোটো গর্ত বা কাদায় ফাটল এর মতো জালযুক্ত প্যাটার্ন। পেনিক এবং তার গবেষকদের মনে তাই প্রশ্ন জেগেছিল যে এই প্যাটার্ন এবং সূক্ষ্ম পার্থক্যগুলো পিঁপড়েদের সুবিধা প্রদান করে নাকি এগুলো কেবলমাত্র কাকতালীয়। ছবিগুলোর মাধ্যমে পেনিক পিঁপড়ের মুখের বিভিন্ন প্যাটার্ন আবিষ্কার করেন— মসৃণ, জালিকাযুক্ত, ডোরা কাটা, ছোটো গোলাকার দাগ বিশিষ্ট এবং নলাকৃতির বা গোলাকার এবং এগুলো পিঁপড়ের ১১,৭৩৯ টি চিত্রকে শ্রেণিবদ্ধ করতে সহায়তা করেছিল। মাইমেকোলজিক্যাল নিউজে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে, পেনিক ব্যাখ্যা করেছেন যে কীভাবে ছবিগুলো থেকে প্রাপ্ত শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি পিঁপড়ের মুখে বিভিন্ন প্যাটার্নের বিকাশ এবং পিঁপড়ের আচরণে তারা কী ভূমিকা পালন করতে পারে সে সম্পর্কে আরও অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে। উদাহরণস্বরূপ, কিছু মাটিতে বসবাসকারী পিঁপড়ের উঁচু মতো ঘোরানো গঠন রয়েছে যা তাদের ঘর্ষণ থেকে অতিরিক্ত সুরক্ষা দেয় এবং কঠিন পরিবেশ থেকে রক্ষা করে। গবেষণাটি আরও প্রকাশ করেছে যে পিঁপড়ের মুখের টেক্সচার একাধিকবার বিবর্তিত হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, শক্তিশালী চোয়াল বিশিষ্ট ওডোনটোমাকাস পিঁপড়ের মুখের গঠন বাইরের আক্রমণ ও আঘাত থেকে রক্ষা করে।