সিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা একটি হাইব্রিড ব্যাটারি তৈরি করেছেন যা বিদ্যুৎ সঞ্চয় এবং সরবরাহ করার সাথে ফারফিউরাল অ্যালকোহল এবং ফিওরোয়িক অ্যাসিডের মতো রাসায়নিক উত্পাদন করবে। এই ব্যাটারি রিচার্জেবল এবং রেডক্স ফ্লো ব্যাটারির মতো বৈশিষ্ট্যযুক্ত, ব্যাটারি চার্জ বা ডিসচার্জ করার সময় বায়োমাস থেকে প্রাপ্ত ফারফিওরিলকে দরকারী রাসায়নিকে রূপান্তরিত করতে পারে। হাওহং ডুয়ান এবং চীনের বেইজিং-এর সিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দলের আবিষ্কৃত এই হাইব্রিড ফ্লো ব্যাটারি সিস্টেমের অর্থকরী দক্ষতা বাড়িয়েছে।
রিচার্জেবল ব্যাটারি তাদের ইলেক্ট্রোডে বিদ্যুৎ সঞ্চয় করে, আর রেডক্স ফ্লো ব্যাটারি ইলেক্ট্রোডের সাথে সংযুক্ত ট্যাঙ্কে সংরক্ষিত রাসায়নিক ব্যবহার করে বিদ্যুৎ তৈরি করে। তবে ফারফিউরাল – নিকেল হাইড্রোক্সাইড ব্যাটারি বায়োমাস থেকে উৎপন্ন ফারফিউরালকে, ফারফিউরাল অ্যালকোহল ও ফিওরোয়িক অ্যাসিডে রূপান্তরিত করে।
পেন্টোজ শর্করা থেকে ফারফিউরাল অণু তৈরি হয়, এটা কৃষি জৈববস্তু হিসেবে পরিচিত একটা গুরুত্বপূর্ণ রাসায়নিক যার থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রয়োগের জন্য নানা উপাদান পাওয়া যায়। ফারফিউরালের জারণে ফিওরোয়িক অ্যাসিড তৈরি হয়। ফিওরোয়িক অ্যাসিড খাদ্য সংরক্ষণে, ফার্মাসিউটিক্যালসে ও সুগন্ধি তৈরিতে কাজে লাগে। আবার ফারফিউরালকে বিজারিত হয়ে ফারফিউরাল অ্যালকোহলে রূপান্তরিত হয়, এটা রেজিন, ফ্লেভার এবং ওষুধে কাজে লাগে।
এই ব্যাটারির দ্বৈত-ব্যবহার হল – সৌর সেল ব্যবহার করে চার্জ করার পরে চারটি সিরিজযুক্ত হাইব্রিড ব্যাটারি LED লাইট এবং স্মার্টফোন সহ বিভিন্ন যন্ত্র চালাতে সক্ষম হয়েছে। এর সাথে ব্যাটারি ক্রমাগত ফারফিউরাল অ্যালকোহল এবং ফিওরোয়িক অ্যাসিড উত্পাদন করছে। এই রাসায়নিকগুলো প্রবাহের মাধ্যমে সিস্টেম থেকে দূরে পাঠানো হয়। রোডিয়াম-তামা দিয়ে তৈরি অনুঘটক ব্যাটারি চার্জ করার সময় ইলেক্ট্রোলাইট-যুক্ত ফারফিউরালকে, ফারফিউরাল অ্যালকোহলে রূপান্তরিত করে, আর যখন ব্যাটারি ব্যবহৃত হয়ে চার্জ নিঃসরণ হতে থাকে তখন ফিওরোয়িক অ্যাসিড তৈরি হয়।
গবেষকরা জানিয়েছেন এই হাইব্রিড ব্যাটারি সাধারণ ব্যাটারির সমান শক্তি দেয় সাথে মূল্যবান রাসায়নিক সরবরাহ করে। ১ কিলোওয়াট শক্তি সঞ্চয় করার সময়, ০.৭ কেজি ফারফিউরাল অ্যালকোহল উত্পাদিত হয়, এবং ১ কেজি ফিওরোয়িক অ্যাসিড উত্পাদিত হয় যখন সিস্টেমটি ০.৫ কিলোওয়াট শক্তি প্রদান করে। এই দলের কাজ হাইব্রিড রিচার্জেবল ব্যাটারির স্থায়িত্ব এবং ব্যয়-কার্যকারিতা উন্নত করার দিকে একটা ভালো পদক্ষেপ হলেও, এই ধারণা নিয়ে আরো কাজ করার প্রয়োজন রয়েছে।