প্রাচীন প্রাণীরা গলিত পারমাফ্রস্টের হিমাগার থেকে বেরিয়ে আসছে। উললি গন্ডারের মতো সংরক্ষিত বিলুপ্তপ্রায় মেগাফনা থেকে শুরু করে ৪০০০০ বছরের পুরনো একটি বিশাল নেকড়ে এবং ৭৫০০০০ বছরেরও বেশি পুরনো ব্যাকটেরিয়া পর্যন্ত সকলের বরফ গললে দেখা মিলবে। কিন্তু এদের মধ্যে সবাই যে মৃত তা নয়, শতাব্দী প্রাচীন মস পরীক্ষাগারের উষ্ণতায় প্রাণ ফিরে পেয়েছে। অবিশ্বাস্য হলেও, ৪২০০০ বছর বয়সী রাউন্ডওয়ার্মও বেঁচে উঠেছে। দূরবর্তী অতীত জীবনের এই আকর্ষণীয় ঝলক প্রাচীন বাস্তুতন্ত্রের ইতিহাস, তাদের পরিবেশের বিবরণ সহ গবেষকদের কাছে প্রকাশিত হয়েছে। তবে বরফ গলে গিয়ে প্রাচীন ভাইরাসদের ফিরে আসার বিষয়ে কিছু উদ্বেগও তৈরি করেছে। ওহিও স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষণায় বলা হচ্ছে, প্রচন্ড ঠাণ্ডায় এত বছর থাকার পর বর্তমান পৃথিবীর এই উষ্ণ পরিবেশে ভাইরাসগুলোর ফিরে আসার সম্ভাবনা আছে।
মেটাজিনোমিক্স কৌশল এবং বরফের মূল নমুনাগুলো জীবাণুমুক্ত রাখার নতুন পদ্ধতির সাহায্যে, হিমায়িত অবস্থায় কী রয়েছে তা আরও ভালভাবে বুঝতে গবেষকরা সক্ষম হয়েছেন। দলটি তিব্বত মালভূমির গুলিয়া আইস ক্যাপ থেকে কয়েক ডজন অনন্য ১৫০০০ বছর পুরানো ভাইরাসের একটি সংরক্ষণাগার শনাক্ত করে, তাদের কার্যাবলী সম্পর্কে অধ্যয়ন করেছেন। তারা জানিয়েছেন হিমবাহগুলি ধীরে ধীরে তৈরি হয়েছিল, আর ধূলিকণা, গ্যাসের সাথে সেই বরফে অনেক ভাইরাসও জমা হয়েছিল। জীবাণু বায়ুমণ্ডলে ধূলিকণা এবং আয়নের ঘনত্বের পরিবর্তনের সাথে সম্পর্কযুক্ত, এবং সেই সময়ে জলবায়ু এবং পরিবেশগত অবস্থাও নির্দেশ করতে পারে। প্রাচীনকালের এই হিমায়িত অঞ্চলে চীনে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২২০০০ ফুট উচ্চতায়, গবেষকরা যে ৩৩টা ভাইরাস খুঁজে পেয়েছেন, তার মধ্যে ২৮টা আগে কখনও দেখা যায়নি। এগুলো এমন ভাইরাস যা চরম পরিবেশে বিকশিত হতে পারে, তাদের জিন থেকে বোঝা যায় তারা ঠান্ডা পরিবেশে কোশ সংক্রামিত করতে সক্ষম। এই গলে যাওয়া হিমবাহ থেকে মিথেন, কার্বন যেমন নির্গত হচ্ছে তেমন বিশ্বজুড়ে কোভিড আতঙ্কের পর আবার কী ধরনের প্রাচীন ভাইরাস আসতে পারে, তা নিয়ে গবেষকরা উদ্বিগ্ন।