নেকড়েদের মস্তিষ্কের তুলনায় কুকুরের মস্তিষ্ক অনেক ছোটো যদিও নতুন গবেষণায় দেখা যাচ্ছে যে আধুনিক প্রজননের মাধ্যমে তাদের মস্তিষ্কের আপেক্ষিক আকার কিছুটা হলেও বেড়েছে। প্রাচীনকালের কুকুরের সঙ্গে তুলনা করে দেখা গেছে বিগত দেড়শো বছরে যে আধুনিক প্রজাতির কুকুরের জন্ম হয়েছে তাদের মাথার খুলি শরীরের আকারের তুলনায় বড়ো।কিন্তু এর কারণ বিজ্ঞানীদের কাছে অধরা। বিজ্ঞানীরা মনে করেন বেঁচে থাকার ক্ষেত্রে এদের মস্তিষ্ক ব্যবহার সীমিত হওয়ায় মস্তিষ্কের আকার হ্রাস পেয়েছে। কিন্তু কিছু নেকড়ে সহ ১৫৯টা কুকুরের মাথার খুলির তুলনা করার সময় গবেষকরা অপ্রত্যাশিত কিছু আবিষ্কার করেছেন।
একই আকারের কুকুরের চেয়ে নেকড়ের মস্তিষ্কের আকার প্রায় ২৪ শতাংশ বড়ো। গবেষণায় দেখা গেছে যে হাজার হাজার বছর আগে গৃহপালিত হওয়ার ফলে কুকুরের মস্তিষ্কের কিছু অংশ প্রাথমিকভাবে সঙ্কুচিত হয়ে যায় কারণ সঙ্গী পছন্দ করা বা শিকার করা অথবা অন্যান্য শিকারী প্রাণীর থেকে নিজেকে রক্ষা করা এইসব কারণে তাদের মস্তিষ্কের ব্যবহার করতে হত না। কিন্তু আধুনিক প্রজনন, গত দেড় শতাব্দীতে কুকুরের মস্তিষ্কের উন্নতি ঘটাতে সক্ষম হয়েছে। সুইডেনের স্টকহোম ইউনিভার্সিটির বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞানী নিকলাস কোলম বলেছেন যে বিভিন্ন কুকুরের প্রজাতি সামাজিক জটিলতার বিভিন্ন স্তরে বাস করে এবং জটিল কাজ করে, যার জন্য সম্ভবত মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয় হয়ে পরে। তাদের আপেক্ষিক মস্তিষ্কের আকার বড়ো হওয়ার প্রধান কারণ হল নেকড়েদের তুলনায় তাদের জিনগত ভিন্নতা ।হাঙ্গেরির ইটোভস লর্যান্ড ইউনিভার্সিটির নৃতাত্ত্বিক এনিকো কুবিনি অনুমান সম্ভবত জটিল সামাজিক পরিবেশ, নগরায়ণ এবং আরও নিয়ম ও প্রত্যাশার সাথে অভিযোজনের ফলে এই পরিবর্তন ঘটেছে যা সমস্ত আধুনিক প্রজাতিকে প্রভাবিত করছে ।