চামড়ার অসুখ হিসেবে এগজিমা খুবই পরিচিত নাম। চিকিৎসা পরিভাষায় এর নাম অ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিস। ত্বক শুষ্ক হয়ে ফেটে যাওয়া, চুলকানি, খসখসে হয়ে যাওয়া, ফোস্কা পড়া এগজিমার অন্যতম লক্ষণ। শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে রোগটি সাধারণ তবে প্রতি দশজনের মধ্যে একজন ব্যক্তিকে প্রভাবিত করে।
আগে গবেষকদের ধারণা ছিল যে ইমিউন কোশ এবং সেই কোশ থেকে নিঃসৃত প্রদাহজনক অণু এগজিমা রোগের অসহনীয় চুলকানির প্রধান কারণ। এই চুলকানির কারণে আমরা প্রায়শই ত্বকের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ আরও বেশি করে চুলকে ফেলি যার ফলে ত্বকের আরও ক্ষতি হয়, ও ত্বকে লাল, কাঁচাভাব, ফোলাভাবের সৃষ্টি করে, ত্বক কেটে যায়। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন যে একটি পরিচিত ব্যাকটেরিয়া, স্ট্যাফিলোকক্কাস অরিয়াস, ত্বকে সরাসরি সংবেদনশীল নিউরনগুলোকে ট্রিগার করে ক্রমাগত চুলকানির সৃষ্টি করে। গবেষকদের বিশ্বাস এই আবিষ্কার চিকিৎসা ক্ষেত্রে সহায়তা করতে পারে। গবেষণাটি সেল পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। কয়েক বছর আগে, গবেষকরা বলেছিলেন যে যাদের ফিলাগ্রিন নামক ত্বকের প্রোটিনের অভাব রয়েছে তাদের এগজিমা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি ছিল; কিন্তু ত্বকে এই চুলকানির কারণ তার খুঁজে পাননি। বর্তমানে, ইউএস গবেষকদের একটি দল প্রাণীর মধ্যে পরীক্ষা করে দেখিয়েছেন কীভাবে স্ট্যাফিলোকক্কাস অরিয়াস ব্যাকটেরিয়াটি কাটা বা ক্ষতিগ্রস্ত ত্বকে সংক্রমণ ঘটাতে অনুপ্রবেশ করে, ত্বকের পৃষ্ঠে সংবেদনশীল স্নায়ু কোশে প্রভাব বিস্তার করে ও চুলকানির সৃষ্টি করে।
মানুষের মধ্যে এগজিমা সংক্রমণ পর্যবেক্ষণের জন্য ইঁদুরের উপর করা পরীক্ষায় ইঁদুরগুলোকে স্ট্যাফিলোকক্কাস ব্যাকটেরিয়া দিয়ে লোড করা গজ দিয়ে মোড়ানো হয়েছিল। এস. অরিয়াসের সংস্পর্শে আসা প্রাণীরা তাদের শরীরের ঘা আঁচড়াতে থাকে এবং গবেষকরা দেখেন যে ব্যাকটেরিয়াগুলো বাইরের ত্বকে, স্ফীত অংশে সংবেদনশীল স্নায়ু শেষের কাছাকাছি জড়ো হয়েছে। চিউ এবং সহকর্মীরা দেখেন যখন ব্যাকটেরিয়া ত্বকের সংস্পর্শে আসে তখন প্রোটিজ V8 নামে একটি এনজাইম নিসৃত হয় যা আরেকটি প্রোটিন, PAR1 সক্রিয় করে এবং সংবেদনশীল স্নায়ু উজ্জীবিত করে ইঁদুরের চুলকানি আচরণের সূত্রপাত করে। যখন PAR1 ব্লক করার জন্য ইঁদুরদের একটি ওষুধ দিয়ে চিকিত্সা করা হয়েছিল দেখা গেছে তাদের লক্ষণগুলোর উপশম ঘটে। এই গবেষণায় পরীক্ষিত PAR1 ব্লকারটি ইতিমধ্যেই মানুষের রক্তের জমাট বাঁধা প্রতিরোধ করতে ব্যবহৃত হয়েছে তাই যাতে এটি পুনরায় ব্যবহার করা যেতে পারে তার জন্য আরও পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রয়োজন।