বিজ্ঞানীরা এমন ওষুধ আবিষ্কার করতে চাইছেন যা থেকে ব্যায়ামের কিছু উপকারিতা পাওয়া যেতে পারে। শারীরিক সক্রিয়তা মানুষের নানা বিপাকীয় পথ সক্রিয় করে স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্য সংক্রান্ত উপকার বিপাকীয় পথ ইস্ট্রোজেন রিলেটেড রিসেপ্টর-কে উদ্দীপ্ত করলে পাওয়া যায়। এই রিসেপ্টরগুলো পেশি, হৃৎপিণ্ড এবং মস্তিষ্কের কলায় পাওয়া যায় এবং তারা বিপাক, অনাক্রম্যতা, প্রদাহ, হোমিওস্ট্যাসিস, বিকাশ, কোষের বৃদ্ধি এবং প্রজননের সাথে যুক্ত জিনের বিস্তৃত অংশকে নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু এই বিপাকীয় পথ সক্রিয় করার একমাত্র উপায় হল ব্যায়াম।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা ব্যায়ামের মতো উপকারিতা পাওয়া যেতে পারে, এমন ধরনের ওষুধ, তথাকথিত ‘এক্সারসাইজ পিল’ আবিষ্কারের প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছেন। ইঁদুরের ওপর প্রাথমিক পরীক্ষায় তাদের ধারণা, সাধারণত ব্যায়ামের দ্বারা উদ্দীপিত হয় এমন প্রাকৃতিক বিপাকীয় পথ এই ওষুধ খেলে উদ্দীপ্ত হতে পারে। আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটির ২০২৪ সালের স্প্রিং মিটিং-এ , ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির প্রধান গবেষক এবং রসায়নবিদ বাহা এলজেন্ডি জানিয়েছেন, প্রতিদিন ইঁদুরকে এই ওষুধ দিয়ে দেখা গেছে এতে ইঁদুরের পেশির কার্যকারিতা, ফিটনেস এবং সহনশীলতা উন্নতি হয়েছে। ওষুধ ছাড়া এই শারীরিক পরিবর্তন আসার জন্য ইঁদুরকে অনেক বেশি সক্রিয় হতে হত। তারা বলছেন ইঁদুরকে ওষুধ দিয়ে দেখা গেছে তাদের বিপাকের সময় ফ্যাটি অ্যাসিড ব্যবহৃত হচ্ছে, আর ইঁদুরদের ওজন কমছে। এই ফ্যাটি অ্যাসিড বিপাক মানুষের ক্ষেত্রে একমাত্র ব্যায়াম ও উপোসের সময় হয়। গবেষকদের আবিষ্কৃত ওষুধ ব্যায়ামের প্রধান বিকল্প না হলেও এটা একটা আণবিক পথকে ট্রিগার করতে পারে বলে তারা মনে করছেন যাতে হার্ট, মস্তিষ্ক এবং কিডনিতে ব্যায়ামের সুবিধা পাওয়া যায়।
তাদের মতে মানুষের ক্ষেত্রেও এই ওষুধ একভাবে কাজ করলে, নানা ধরনের রোগ যেমন হার্ট ফেলিওর বা স্নায়ুর রোগের চিকিৎসায় কাজে লাগবে। অনেক মানুষ ব্যায়াম করতে পারেন না, আবার বৃদ্ধ ব্যক্তি বা রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি, এই ধরনের একটা বড়ি থেকে ব্যায়ামের প্রভাব পেতে পারেন, যা তাদের জন্য যথেষ্ট উপকারী হতে পারে।