রোডেন্ট বললেই আমাদের চোখে ভেসে ওঠে অনিষ্টকারী ইঁদুরের ছবি। কাটা জামাকাপড়, খাতাপত্রের বেহাল দশা। কেউ বা আরও একধাপ এগিয়ে রোগের বাহক হিসেবে ইঁদুর-বংশের শাপশাপান্ত করতে পারেন। কিন্তু আমাদের অভিজ্ঞতার সীমা রোডেন্ট পরিবারের গুটিকয়েক সদস্যকে নিয়েই।
ইঁদুর জাতীয় বেশিরভাগ প্রাণীর বসবাস কিন্তু লোকালয় থেকে দূরে। বৃষ্টিঅরণ্যের এককোণে, পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে কিংবা মরুভূমি অথবা নদীর ধারের নরম মাটিতে। প্রকৃতিতে ৫৬ মিলিয়ন বছর ধরে স্তন্যপায়ীর এই ছোট্ট গোষ্ঠী টিকে আছে। অবধারিত ভাবেই তাই, পৃথিবীর নানা বাস্তুতন্ত্রে ইঁদুর বা তাদের আত্মীয়দের গুরুত্বও নেহাত ফেলনা নয়।
কিন্তু, দুর্ভাগ্য। অনেক রোডেন্ট প্রজাতিই আজ বিলুপ্তির দোরগোড়ায়। স্বাভাবিক বাসস্থান ক্রমশ সীমিত হয়ে আসছে। ক্ষতিকর প্রাণী হিসেবে সতর্ক মানুষের শিকার হচ্ছে। তাছাড়া দূষণ আর জলবায়ু পরিবর্তনের মতো কারণ তো রয়েইছে। কিন্তু অন্য বন্যপ্রাণী যতখানি ‘ফুটেজ’ পায় সংরক্ষণপন্থীদের নজরে, ইঁদুরের ভাগ্যে সেই শিকে ছেঁড়ে না। গুটিকয়েক বাস্তুতন্ত্রবিদ ইদানীং রোডেন্টদের বাঁচাতে রীতিমত চিঠিচাপাটি করছেন। তাঁরাই চোখে আঙুল দিয়ে দেখাচ্ছেন ভুলটা কোথায়।
একটা তালিকাও তাঁরা প্রকাশ করেছেন। ইঁদুরদের অবদান বিষয়ে। কোন গাছের বীজ কোথায় ছড়াবে সেটা ইঁদুরের ‘হাতেই’ থাকে অনেকসময়। বন্যা বা খরা নিয়ন্ত্রণে তাদের ভূমিকা রয়েছে। এছাড়াও খাদ্যশৃঙ্খলে ওপরের খাদককে টিকিয়ে রাখতে ইঁদুরের গুরুত্ব তো বলাই বাহুল্য।