বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছিলেন যে আমাদের পৃথিবীর আভ্যন্তরীণে কঠিন লোহার কেন্দ্র মসৃণ নয়, বরং উঁচুনীচু, আর প্রতি সাত দশকে দিক পরিবর্তন করার আগে এটা ঘূর্ণন বন্ধ করে দেয়। এখন, আরেকটি গবেষণায় গবেষকরা আশ্চর্যজনক তথ্য দিয়েছেন, তারা বলছেন লোহার পরমাণুগুলি নড়াচড়া করতে পারে। এইজন্য পৃথিবীর কঠিন লোহার কোর কিছুটা নরম। পৃথিবীর আভ্যন্তরীণ কেন্দ্রে, আমাদের পায়ের প্রায় ৫১০০ কিলোমিটার নীচে, লোহার পরমাণুগুলো একটি ষড়ভুজ কাঠামোর জালকে শক্তভাবে আটকানো আছে, যা প্রচণ্ড চাপ এবং উচ্চ তাপমাত্রায় সংকুচিত থাকে। সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের পর্যবেক্ষণ থেকে প্রকাশ পেয়েছে যে কীভাবে পৃথিবীর আভ্যন্তরীণ গোলকাকার কেন্দ্র কিছু চমকপ্রদ বৈশিষ্ট্য দেখা যায়, এখানে লোহা কঠিন হওয়ার পরিবর্তে, সীসার মতো নরম বা গলিত লোহার মতো আকারে থাকে।
চীনের সিচুয়ান ইউনিভার্সিটির পদার্থবিজ্ঞানী এবং তার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সহকর্মীরা কম্পিউটার সিমুলেশন এবং ল্যাব পরীক্ষার সিরিজ পরিচালনা করে জানিয়েছেন, ষড়ভুজাকার জালক কাঠামোর ভিতরে লোহার পরমাণু অবস্থান পরিবর্তন করতে থাকে। ২৩০ থেকে ৩৩০ GPa-এর চাপে এবং লোহার গলনাঙ্কের ঠিক নীচে তাপমাত্রায়, ক্লোজ-প্যাকড জালকাকার কাঠামোর সিমুলেশন প্রস্তাব করে যে লোহার পরমাণুগুলির সম্মিলিত গতির একটি প্যাটার্ন থাকে। যেন লোহার পরমাণুগুলো নৃত্যের ছন্দে নাচতে থাকে। একটি পরমাণু তার ভারসাম্যের অবস্থান থেকে লাফ দেয় আর তার নিকটবর্তী পরমাণুকে ঠেলে দেয়। এই দ্রুত প্রসারণটি পিকোসেকেন্ডে ঘটে, যা এক সেকেন্ডের এক ট্রিলিয়ন ভাগ, তাই এই আন্দোলন জালকের কাঠামোকে ব্যাহত করে না। পরিবর্তে, পরমাণুগুলি এমনভাবে ঝাঁকুনি দেয় যে লোহার কোরটি অত্যন্ত নরম কঠিনের মতো আচরণ করে। গবেষকরা বলেছেন কম্পিউটার বেসড সিমুলেশন থেকে এই মৌলিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানা যাচ্ছে যা বিজ্ঞানীদের পৃথিবীর আভ্যন্তরীণ কেন্দ্রের গতিশীল প্রক্রিয়া এবং বিবর্তন বুঝতে সাহায্য করবে। গবেষণাটি পিএনএএস-এ প্রকাশিত হয়েছে।