গবেষণায় বলা হচ্ছে পৃথিবীর চারপাশে মহাকাশীয় বর্জ্যের দূষণকারী উপস্থিতি বাড়ছে। রকেট, স্পেস স্টেশন এবং নিষ্ক্রিয় স্যাটেলাইটের যে অংশগুলো বায়ুমণ্ডলে পুনঃপ্রবেশের পর পুড়ে যায় তা আমাদের গ্রহের বায়ুমণ্ডলে ধাতুর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র চিহ্ন রেখে যায়। এই ধাতুর উপস্থিতির প্রভাব কী হতে পারে বর্তমানে তা সঠিকভাবে পূর্বাভাস দেওয়া না গেলেও, মহাকাশে উৎক্ষেপণ বৃদ্ধির সাথে সাথে, স্ট্রাটোস্ফিয়ারে ধাতব বাষ্পের পরিমাণ বৃদ্ধির পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে।
গবেষকরা তাদের গবেষণাপত্রে জানিয়েছেন বর্তমানে, স্ট্রাটোস্ফিয়ারিক কণার মধ্যে বেশিরভাগ উপাদান প্রাকৃতিক উল্কা উৎস থেকে প্রাপ্ত লোহা, সিলিকন এবং ম্যাগনেসিয়াম। তবে, উপরের স্তরের রকেট এবং উপগ্রহগুলির পুনঃপ্রবেশের ফলে উপাদানের পরিমাণ পরবর্তী ১০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে প্রভূত বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে অ্যালুমিনিয়ামের পরিমাণ মেটেওরিক লোহার পরিমাণের সমান বা বেশিও হয়ে যেতে পারে। স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে ভাসমান অ্যারোসলগুলো বেশিরভাগ সালফিউরিক অ্যাসিডের কণা যা কার্বনাইল সালফাইড গ্যাসের অক্সিডেশন দ্বারা প্রাকৃতিকভাবে বা বায়ুমণ্ডলের দূষক থেকে উত্পাদিত হয়। এই ফোঁটাগুলোতে উল্কার বায়ুমণ্ডলীয় প্রবেশ থেকে প্রাপ্ত ধাতু এবং সিলিকনের চিহ্ন থাকতে পারে।
গবেষকরা প্রায় ৫০০০০০ পৃথক অ্যারোসোল ফোঁটা বিশ্লেষণ করে, মহাকাশযান তৈরিতে ব্যবহৃত ধাতুগুলির চিহ্ন খুঁজেছেন, সেখান থেকে তারা প্রায় ২০টি ধাতু শনাক্ত করেছেন। কিছু ধাতুর প্রাপ্তির অনুপাত উল্কা থেকে প্রাপ্ত ধাতুর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল, কিন্তু লিথিয়াম, অ্যালুমিনিয়াম, তামা এবং সীসার অনুপাত থেকে বোঝা যায় এইসব ধাতু মহাকাশযান থেকে আসছে। অন্যান্য কিছু ধাতু, যেমন নিওবিয়াম এবং হাফনিয়াম উল্কা থেকে পাওয়া যায় না, সেক্ষেত্রে তাদের উৎস হল মহাকাশযান। গবেষকরা দেখেছেন স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারিক অ্যারোসলের প্রায় ১০ শতাংশ জুড়ে মহাকাশযান থকে প্রাপ্ত উপাদান পাওয়া যাচ্ছে।
পৃথিবী এবং বায়ুমণ্ডলে এর বিভিন্ন প্রভাব হতে পারে, এই কণার উপস্থিতি স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে জলকে বরফে পরিণত হওয়াকে প্রভাবিত করতে পারে, স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারিক অ্যারোসল কণার আকারকে প্রভাবিত করতে পারে। আবার অ্যারোসল কণাগুলিতে লবণ জমা করতে এবং আলোর স্ট্রাটোস্ফিয়ারিক প্রতিসরণকেও পরিবর্তন করতে পারে। এই গবেষণা প্রসিডিংস অফ দ্য ন্যাশানাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সস -এ প্রকাশিত হয়েছে।