রান্নার মশলা হলুদে এমন এক প্রাকৃতিক যৌগ রয়েছে যা অ্যাসিড-হ্রাসকারী ওষুধ ওমেপ্রাজলের মতোই বদহজমের উপসর্গ নিবারণ করতে কার্যকরী। এমন কথাই বলেছে বিএমজি এভিডেন্স বেসেড মেডিসিন জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা পত্রে। কারকুমা লঙ্গা নামে উদ্ভিদের মূল থেকে নিষ্কাশিত, হলুদে, কারকিউমিন নামে একটি যৌগ রয়েছে। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় বদহজম-সম্পর্কিত সমস্যা নিবারেণের জন্য কারকিউমিন ব্যবহৃত হয় যা প্রদাহ রোধ করে এবং জীবাণুর প্রকোপ কমায়। তবে প্রচলিত ওষুধের তুলনায় হলুদ কতটা কার্যকরী তা নিয়ে আগে কোনো কাজ হয়নি। গবেষকরা তাই নিজেদের ইচ্ছেমতো ১৮-৭০ বছর বয়সী ২০৬ রোগীকে বাছাই করেছিল যারা বারবার কোনো অজানা কারণে পেট খারাপের সমস্যায় ভুগছিল (ফাংশানাল ডিসপেপসিয়া)। গবেষকরা তাদের তিনটে দলে ভাগ করেন। ৬৯ জন রোগীর একটি দলকে হলুদ (দুটি বড়ো ২৫০ মিলিগ্রাম কারকিউমিন ক্যাপসুল দিনে ৪ বার) এবং একটি ছোটো ডামি ক্যাপসুল দেওয়া হয়; ৬৮ জন রোগীকে ওমেপ্রাজলের একটি ছোটো ২০ মিলিগ্রাম ক্যাপসুল দৈনিক এবং দুটি বড়ো ডামি ক্যাপসুল দিনে ৪ বার দেওয়া হয় এবং ৬৯ জন রোগীকে হলুদ ও ওমেপ্রাজল দেওয়া হয়। ওমেপ্রাজল একটি প্রোটন পাম্প ইনহিবিটার হিসেবে কাজ করে। যে সব রোগীদের খেলেই পেট ভীষণভাবে ভর্তি হয়ে গেছে মনে হয় এবং পেটে ব্যথা বা জ্বালাভাব হয় তাদের এই ওষুধ দেওয়া হয়। কিন্তু এই ওষুধের দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারের ফলে ফ্র্যাকচারের ঝুঁকি বেড়ে যায়, মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টের ঘাটতি দেখা দেয় এবং সংক্রমণের ঝুঁকিও বেড়ে যায়। রোগীদের প্রথমে ২৮ দিন পরে এবং তারপর আবার ৫৬ দিন পরে পুনরায় মূল্যায়ন করা হয়েছিল। পরীক্ষার শুরুতে তিনটি দলের রোগীদের একই রকম ক্লিনিকাল বৈশিষ্ট্য এবং ইনডাইজেশন স্কোর ছিল। সিভিয়ারিটি ডিসপেপসিয়া অ্যাসেসমেন্ট স্কোর বা SODA দ্বারা মূল্যায়ন করা হয়েছিল।
SODA স্কোর থেকে জানা যায় যে ২৮ দিনের মধ্যে ব্যথা এবং অন্যান্য উপসর্গগুলো দুটি ক্ষেত্রেই অর্থাৎ শুধু কারকিউমিন ব্যবহারের দল এবং শুধু ওমেপ্রাজোল ব্যবহারের দলের জন্য রোগের লক্ষণ ও তীব্রতায় উল্লেখযোগ্য হ্রাস পায় এবং ৫৬ দিনের মাথায় তা আরও কমে যায়। গবেষকদের মতে এই নিয়ন্ত্রিত ট্রায়ালটি ফাংশানাল ডিসপেপসিয়ার চিকিত্সার জন্য অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য প্রমাণ সরবরাহ করে, এবং ক্লিনিকাল ট্রায়ালে কারকিউমিন ব্যবহারের উপর গুরুত্ব দেওয়ার দিকে আলোকপাত করে।