অ্যামাজন বা কঙ্গোর মতো নিরক্ষীয় অঞ্চলের বড়ো বড়ো বৃষ্টিঅরণ্য কার্বন ডাইঅক্সাইড শোষণ করে নেয় বায়ুমণ্ডল থেকে। কিন্তু বিপদের খাঁড়া তাদের মাথাতেও ঝুলছে। ভয়ের কারণটা হল বিধ্বংসী সব ঘূর্ণিঝড়। অতিকায় বৃক্ষগুলো গোড়া থেকে উপড়ে ভেঙে পড়ে প্রবল ঝড়ের মুখে। সমস্যাটা তারপরেও থেকে যায়। মৃত এইসব গাছ জঙ্গলের মধ্যেই পচতে শুরু করে। তখন কার্বন নিঃসরণের বড়ো উৎস হয়ে ওঠে তারা।
গবেষণা বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের দরুন যেসব ঝড়ঝঞ্ঝা আসতে চলেছে তাতে অ্যামাজনে এই ধরণের গাছ উপড়ে পড়ার ঘটনা বাড়তে থাকবে। এটা একটা যোগসূত্র। বায়ুমণ্ডলে জলবায়ু সংকটের প্রভাব আর স্থলভাগে জঙ্গলে মহীরুহের মৃত্যু। বিভিন্ন মডেলে এই ফাঁকটা থেকেই যাচ্ছিল এতদিন।
গবেষণাটা চালিয়েছেন ‘নেক্সট জেনারেশন ইকোসিস্টেম এক্সপেরিমেন্টস’ নামক সংস্থার বিজ্ঞানীরা। নেতৃত্বে ছিলেন লরেন্স বার্কলে ন্যাশানাল ল্যাবরেটরির বরিষ্ঠ বিজ্ঞানী জেফ চেম্বার্স। তিনি বলছেন, বায়ুমণ্ডলের গতিপ্রকৃতির পরিবর্তন আর ডাঙায় ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে এই সম্পর্ক স্থাপন গোটা বিশ্বের জন্যেই জরুরি। এবং বিপদের সংকেত কেবলমাত্র নিরক্ষীয় অঞ্চলের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য নয়। পার্বত্য এলাকায় বা সমুদ্র তীরবর্তী নিচু ভূভাগের জন্যেই একই নিয়ম খাটে।
আনুমানিক একটা হিসেবও পেশ করেছেন জেফ চেম্বার্স ও তাঁর গবেষক দল। এই শতাব্দীর শেষে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপে নষ্ট হতে পারে অ্যামাজনের ২৫০০০ বর্গমিটারের বেশি জায়গা। বড়ো বড়ো গাছ উপড়ে পড়ার ঘটনা বেড়ে যাবে ৪৩%। ঝড়ের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত বনাঞ্চলে ৫০% সংখ্যা কমবে মহীরুহের।
নেচার কমিউনিকেশন পত্রিকায় গত ৬ই জানুয়ারি প্রকাশিত হল এই গবেষণাপত্র।