মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আবার কোভিড-১৯-এর দাপট বাড়ছে। আবার হাসপাতালগুলোর বিছানা ভর্তি হচ্ছে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া অধিকাংশ রোগী এখনও পর্যন্ত টীকা নিতে পারেননি। গবেষকরা দু’টি চার্ট তৈরি করেছেন। একটি চার্টে দেখা যাচ্ছে, ২৪ জানুয়ারি থেকে ২৪ জুলাইয়ের মধ্যে টীকা নেওয়া রোগীদের হাসপাতালে ভর্তির ক্রমবর্ধমান হার চোখে পড়ার মত কম। আর একটা চার্টে দেখে গিয়েছিল টীকা না কোভিড রোগীদের হাসপাতালে ভর্তির ক্রমবর্ধমান হার অনেক বেশি। দু’টো চার্ট থেকে গবেষক, চিকিৎসকদের বার্তা, মহামারীর সময় যারা টীকা নিয়েছিলেন বা এখনও নিচ্ছেন তাদের বিপদ অনেক কম টীকা না নেওয়া নাগরিকদের তুলনায়। হাসপাতালে ভর্তি হয়ে জীবন-মরণ লড়াই অনেক কম করতে হওয়ার সম্ভাবনা। পরিসংখ্যান এ-ও জানাচ্ছে টীকা নেওয়া কোনও রোগী আবার কোভিডে আক্রান্ত হলেও তাকে হাসপাতালে কম সময় থাকতে হচ্ছে। ইউএস সেন্টার অফ ডিজিস অ্যান্ড প্রিভেনশনের ডিরেক্টর রচেল ওয়ালনেস্কি বার বার মার্কিন নাগরিকদের উদ্দেশে আবেদন করেছেন, দয়া করে এই ভাইরাসকে ছোট করে দেখবেন না।
২৬ অগস্ট পর্যন্ত আমেরিকায় এক লক্ষ নাগরিক কোভিডে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। জানুয়ারিতে কিন্তু এই ছবিটা ছিল না। জানুয়ারির পর থেকে আমেরিকায় টীকা না নেওয়া মানুষের মধ্যে কোভিডের প্রবেশ অনেক বেশি টীকা নেওয়া ব্যক্তিদের তুলনায়। আমেরিকায় ডেল্টা ভ্যারিয়ান্ট ধরা পড়েছিল জুনে। তারপরের গবেষনাতেও দেখা গিয়েছে, টীকা না নেওয়া মানুষ-১৮ বছর থেকে বৃদ্ধদের অনেক বেশিবার ডাক্তারদের কাছে যেতে হয়েছে, ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে।
আলাদা একটা গবেষণায় এ-ও জানা গিয়েছে, সবসময় কিন্তু টীকা সব মানুষকে কোভিড-মুক্ত রাখছে না। ইউরোপের মত আমেরিকাতেও এখন দাপট সেই ডেল্টা ভ্যারিয়ান্টের। যাকে নিয়ে দুশ্চিন্তা অনেক বেশি আগের তুলনায়। চিকিৎসকরা লক্ষ করেছেন, টীকা নেওয়ার পরেও কিছু মানুষের শরীরে ডেল্টা ভ্যারিয়ান্ট ঢুকে পড়ছে এবং তাদের থেকে অন্য মানুষও সংক্রামিত হচ্ছেন! ২৫ জুলাইয়ের পর করা একটা সার্ভে থেকে গবেষকরা দেখেছেন, টীকা না নেওয়া একজন মানুষকে অন্তত ৩০ বার হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে। সেখানে প্রতি এক লক্ষ টীকা নেওয়া মানুষের মধ্যে একজন আবার এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন! এছাড়াও, দেখা গিয়েছে, টীকা না নেওয়া একজন ব্যক্তি টীকা নেওয়া ব্যক্তির তুলনায় অন্তত পাঁচবার বেশি কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়েছেন!
একজন অভিজ্ঞ শিশু চিকিৎসক ক্যাথরিন এডোয়ার্ডসই হয়ত এই প্রসঙ্গে সত্যি কথাটা বলেছেন। “টীকা হয়ত সংক্রমণ বন্ধ করতে পারবে না। কমাতে পারবে। তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ, টীকা মানুষকে ভেন্টিলেশন থেকে বার করে আনতে পারবে। সেটাও তো কম পাওনা নয়!”