এই প্রথম ব্ল্যাক হোলের হার্ট বিট রেকর্ড করলেন বিজ্ঞানীরা, মিলল বড় রহস্যের সমাধানসূত্র।
ব্ল্যাক হোল (Black Hole) বা কৃষ্ণগহ্বরের হৃদস্পন্দনের (Heartbeat) ছবি তুললেন বিজ্ঞানীরা। আর সেই ছবিই প্লাজ়মা জেটগুলির (Plasma Jets) একটি বড় রহস্যের সমাধান করেছে। ব্ল্যাক হোলের এই হার্টবিট বা তার থেকে নির্গত আলোর ওঠানামা প্রায় ১৫ বছর ধরে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছিল। আর সেই পর্যবেক্ষণ থেকে উঠে এসেছে, ব্ল্যাক হোলের খাওয়ানোর ধরন সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য।
ব্ল্যাক হোলের ইভেন্ট হরাইজ়নের বাইরে রয়েছে একটি কাঠামো, যাকে বলা হয় করোনা ফর্মস। সেখানেই প্লাজ়মার শক্তিশালী জেটগুলি খুঁটি থেকে উৎক্ষেপণ শুরু করে। সয়েন্স অ্যালার্টের তরফে ব্যখ্যা করে বলা হয়েছে, এই প্রক্রিয়াটি করোনা থেকে উপাদানকে শূন্যে আলোর কাছাকাছি গতিতে ইন্টারস্টেলার স্পেস বা আন্তঃনাক্ষত্রিক স্থানে ঠেলে দেয়। এই প্রক্রিয়াটিকেই বলা হচ্ছে কৃষ্ণগহ্বরের হৃদস্পন্দন বা ব্ল্যাক হোলের হার্টবিট। ব্ল্যাক হোল কী ভাবে কাজ করে, সেই সংক্রান্ত সব ধন্দ্বের সমাধান করে দিচ্ছে এই প্রক্রিয়া।
হার্টবিট থেকে ব্ল্যাক হোল সম্পর্কে নতুন অন্তর্দৃষ্টি।
এর আগে বিজ্ঞানীরা মনে করতেন যে, করোনা এবং জেট একই জিনিস। কিন্তু পরে দেখা গেল, “তারা একের পর এক উত্থিত হয় এবং জেটটি করোনা থেকে অনুসরণ করে।” সায়েন্স অ্যালার্টের কাছে এমনই ব্যাখ্যা করেছেন গ্রনিনজেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাস্ট্রোফিজিসিস্ট মারিয়ানো মেন্ডেজ়।
পর্যবেক্ষণের জন্য যে ব্ল্যাক হোলটিকে কাজে লাগানো হয়েছিল, সেটির নাম জিআরএস ১৯১৫ + ১০৫। সূর্য থেকে প্রায় ৩৬,০০০ আলোকবর্ষ দূরে এর অবস্থান। এই ব্ল্যাক হোলটি কাছাকাছি থাকা একটি বস্তুকে খেয়ে নেয়, যা আদতে একটি তারা।
এই ব্ল্যাক হোলটি সূর্যের ভরের ১২ গুণ বেশি এবং এটিকে আমাদের গ্যালাক্সিতে পরিচিত বৃহত্তম ব্ল্যাক হোলগুলির মধ্যে একটি করে তুলেছে। কী ভাবে জেট তৈরি হয় তা বোঝার জন্য বিজ্ঞানীরা যাত্রা করেছিলেন, যার জন্য তারা ১৯৯৬ এবং ২০১২ সাল থেকে ব্ল্যাক হোলের এক্স-রে এবং রেডিও ডেটা সংগ্রহ করেছিলেন।
এই গবেষণার ফলাফল বিজ্ঞানীদের বুঝতে সাহায্য করবে যে, কী ভাবে ব্ল্যাক হোলগুলি খাওয়ায় এবং এটিকে সহজতর করে এমন প্রক্রিয়াগুলির উপর আলোকপাত করতে পারে।