কোভিডের অন্য দিক

কোভিডের অন্য দিক

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১০ আগষ্ট, ২০২১

সামুদ্রিক শৈবাল থেকে সামুদ্রিক স্পঞ্জ। কৃত্রিম নয়। পুরোপুরি প্রাকৃতিক। ভারত মহাসাগরের উপকূলের একটি জায়গা। নাম জাঞ্জিবার। সেখানে রয়েছে জামবানি নামে একটি গ্রাম। সেখানকার মহিলাদের অন্যতম জীবিকা কী? শৈবাল থেকে সামুদ্রিক স্পঞ্জ তৈরি করা। আগে মহিলারা এই কাজ করতেন না। মাছ ধরা ছিল তখন তাঁদের প্রধান কাজ। কিন্তু যত দিন গিয়েছে, সমুদ্রের উষ্ণায়ন বেড়েছে। মাছ ধরতে গিয়ে দিনের পর দিন পুরুষ এবং মহিলা নুলিয়া-উভয়েই খালি হাতে ফিরে এসেছেন। তার ওপর গত বছর থেকে যোগ হয়েছে কোভিডের মারণ প্রকোপ। পেটের জ্বালায় ওই মহিলা এবং পুরুষ নুলিয়ারা বদলেছেন তাদের পেশা। শুরু করেছেন প্রাকৃতিক স্পঞ্জ তৈরি করা।
কিন্তু তাঁদের মনে হচ্ছে এই কাজ যেন তাদের কাছে সাপে বর! কোভিডের প্রকোপে মানুষের মধ্যে কৃত্রিম বস্তু ব্যবহার করায় অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। সেখানে এই সামুদ্রিক স্পঞ্জ যা পুরোটাই প্রাকৃতিক, ভীষণভাবে গ্রহণযোগ্য হয়েছে ক্রেতাদের কাছে। আর স্পঞ্জ এমন এক প্রয়োজনীয় দ্রব্য যা ঘরে ঘরে লাগে। সেই কারণে জাঞ্জিবারের মেয়েদের তৈরি করা সামুদ্রিক স্পঞ্জ ‘মিডলম্যানের হাত’ ধরে পৌঁছে যাচ্ছে ডেনমার্ক, ভিয়েতনাম, ফ্রান্স, এমনকী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও। সেখানে এই স্পঞ্জ সাবান, খাবার এবং ক্রিমের ইমালসিফাইংয়ের কাজে ব্যবহৃত হছে। হচ্ছে মানে ক্রমশ এই স্পঞ্জের চাহিদা ওই দেশগুলোয় বাড়ছে। এক একটি স্পঞ্জের দাম? ২০ ডলার। জাঞ্জিবারের মহিলাদের পাশে দাড়িয়েছে সুইৎজারল্যান্ডের একটি স্বেছাসেবী সংস্থা। আজ নয়, ২০০৯ থেকে। প্রত্যেকদিন তৈরি হয় প্রায় ১৫০০ স্পঞ্জ। জাঞ্জিবার এলাকাটা আসলে তানজনিয়ার উপকূলে। সেখানকার মহিলাদের পাশাপাশি তিউনিসিয়া, মাদাগাসকারেও সমান তালে চলছে স্পঞ্জ তৈরির কাজ। কিন্তু আবহাওয়ার পরিবর্তন? ওঁরা বলেন “আমরা খুব একটা বুঝতে পারি না! আমাদের কাজে বিশেষ অসুবিধা হয় না।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *