বোর্নিও দ্বীপের অধিবাসী স্থানীয় প্রোবোসিস বানর তাদের বড়ো এবং অস্বাভাবিক চেহারার নাকের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে কুৎসিত প্রাণীদের মধ্যে একটা হিসেবে চিহ্নিত। স্ত্রী প্রবোসিস বানরের তুলনায় পুরুষদের নাসিকা গহ্বর অনেক বড়ো, আর গহ্বরের আকার মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের ভিন্ন আকৃতির হয়। অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ANU) এর গবেষকরা, সায়েন্টিফিক রিপোর্টস-এ ব্যাখ্যা করেছেন – কেন পুরুষ প্রোবোসিস বানরের নাকের গঠন বড়ো এবং বর্ধিত হয়। গবেষকরা প্রোবোসিস বানরদের মাথার খুলির অস্থির নাসিকা গহ্বর পরীক্ষা করে দেখেছেন যে তাদের বড়ো নাক বেশ কয়েকটি বড়ো সুবিধা দেয়, তার মধ্যে একটা হল মহিলা সাথীদের আকর্ষণ করা। প্রোবোসিস বানর উপকূলীয় ম্যানগ্রোভ, বনে বাস করে আর প্রায়শই গাছের জন্য একে অপরকে দেখতে পায় না। তাই জোরে, নাক দিয়ে শব্দ করা একে অপরের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে পুরুষদের ক্ষেত্রে।
ডাঃ ক্যাথারিন বালোলিয়া এবং প্রাক্তন ANU মাস্টার্সের ছাত্র পিপা ফিটজেরাল্ড প্রাইমেটদের অস্থি নাসিকা গহ্বরের অভ্যন্তরীণ কাঠামোর আকার এবং আকৃতি পরিমাপ করার জন্য যাদুঘরের সংগ্রহে রাখা প্রোবোসিস বানরের খুলির ত্রিমাত্রিক স্ক্যান ব্যবহার করেছেন। তারা দেখতে পান যে পুরুষ প্রোবোসিস বানরের নাসিকা গহ্বরের হাড়ের গঠনের আকৃতি বিবর্তিত হয়েছে যাতে তারা জোরে নাক দিয়ে শব্দ নির্গত করতে পারে আর গর্জন করতে পারে। বৃহত্তর নাকের গহ্বরের জন্য জোরালো দীর্ঘ আওয়াজ করতে সক্ষম পুরুষ বানরদের ডাক তাদের স্বাস্থ্য এবং আধিপত্য জাহির করতে সহায়তা করে। এতে পুরুষ বানররা স্ত্রী বানরদের আকৃষ্ট করতে পারে, আর অন্যান্য পুরুষরাও এই আওয়াজে দূরে থাকে। একজন পুরুষ যত বেশি নারীকে আকৃষ্ট করতে পারে, সে তত বেশি সন্তানের জন্ম দিতে পারে। আর এই বানরদের নাকের মাংসল টিস্যু সম্ভবত সময়ের সাথে সাথে বড়ো হয়ে গেছে কারণ এটা তাদের নাক দিয়ে হুঙ্কার ছাড়তে, গর্জন করতে সাহায্য করে। প্রোবোসিস বানর এই ডাকের সময় দৃঢ়ভাবে তাদের নাক সোজা করে। মহিলারা তখন সঙ্গী বাছাই করার জন্য বড়ো নাককে দৃশ্যত আকর্ষণীয় মনে করতে শুরু করে কারণ এই ডাকে স্বাস্থ্য এবং আধিপত্যের একটা সংকেত থাকে।