দ্য ল্যানসেটে প্রকাশিত গ্লোবাল বার্ডেন অফ ডিজিজ স্টাডি (জি বি ডি) ২০২১-এর সাম্প্রতিক ফলাফলের পূর্বাভাস অনুযায়ী বিশ্বব্যাপী মানুষের আয়ু ২০২২ থেকে ২০৫০ সালের মধ্যে পুরুষদের ক্ষেত্রে ৪.৯ বছর আর মহিলাদের ক্ষেত্রে ৪.২ বছর বৃদ্ধি পাবে। বলা হচ্ছে, যে সমস্ত দেশে মানুষের গড় আয়ু কম, সেই সব দেশে গড় আয়ু বৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি হবে। বিশ্বব্যাপী আয়ু ২০২২ সালে ৭৩.৬ বছর বয়স থেকে ২০৫০ সালে বেড়ে ৭৮.১ বছর বয়স হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যকর জীবনের সম্ভাবনা অর্থাৎ একজন ব্যক্তি কত বছর ধরে সুস্বাস্থ্য নিয়ে বেঁচে থাকার আশা করতে পারেন তা ২০২২ সালে ৬৪.৮ বছর ছিল, যা বেড়ে ২০৫০ সালে ৬৭.৪ বছর হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ক্রিস মারে, ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ মেট্রিক্স সায়েন্সের চেয়ারম্যান এবং ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভালুয়েশনের পরিচালক জানিয়েছেন, সামগ্রিকভাবে আয়ু বৃদ্ধির পাশাপাশি, বিস্তৃত ভৌগোলিক অঞ্চল জুড়ে আয়ুর বৈষম্য কমবে। তিনি বলেন সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন আয়ের অঞ্চলগুলোর মধ্যে স্বাস্থ্য বৈষম্য বজায় থাকলেও ব্যবধান ক্রমশ সঙ্কুচিত হচ্ছে, তার ফলে সাব-সাহারান আফ্রিকাতে প্রত্যাশিতভাবে সবচেয়ে বেশি আয়ু বৃদ্ধি পাবে।
এই সমীক্ষা জানাচ্ছে আগামী বছরগুলোতে মানুষ যে সমস্ত অসংক্রামিত রোগের বোঝায় জর্জরিত হতে চলেছেন, তা হল কার্ডিওভাসকুলার রোগ, ক্যান্সার, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট জনিত অসুখ বা সিওপিডি এবং ডায়াবেটিস। স্থূলতা, উচ্চ রক্তচাপ, সঠিক খাদ্যাভাস্যের অভাব ও ধূমপান পরবর্তী প্রজন্মের রোগের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলতে চলেছে। অর্থাৎ পূর্বাভাস অনুযায়ী মানুষ দীর্ঘজীবী হলেও তারা জীবনের অনেকটা বেশি সময় খারাপ স্বাস্থ্যের জন্য ভুগবেন। ডাঃ মারে জানিয়েছেন বিশ্বব্যাপী রোগের বোঝা দ্রুত হ্রাস করার সবচেয়ে বড় সুযোগ হল আচরণগত এবং বিপাকীয় ঝুঁকির কারণগুলো নীতিগত হস্তক্ষেপের মাধ্যমে প্রতিরোধ ও প্রশমিত করার চেষ্টা করা। গবেষকরা বিশ্বব্যাপী রোগের সাথে জীবন যাপন করার ক্ষেত্রে উন্নত আচরণ এবং বিপাকীয় ঝুঁকির উল্লেখ করেছেন, কিন্তু নিরাপদ পরিবেশ ও শৈশবে উন্নত পুষ্টি এবং টীকা রোগের বোঝা হ্রাসের ক্ষেত্রে সহায়ক বলে তারা পূর্বাভাস দিয়েছেন।