চিনের সবচেয়ে বড়ো রকেট ‘লং মার্চ-৫’ চেপেই দেশের দক্ষিণে হায়নান দ্বীপের ‘ওয়েনচ্যাং স্পেস লঞ্চ সেন্টার’ থেকে ৩রা মে বিকেল ৫টা ২৭ মিনিট নাগাদ চাঁদের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছে চিনের চন্দ্রযান চ্যাং-৬। প্রাথমিক ভাবে যা জানা গিয়েছে, চ্যাং-৬ অবতরণ করবে চাঁদের সুদূরতম প্রান্তে, দক্ষিণ মেরুর অ্যাটকেন বেসিনে। এই অংশ পৃথিবী থেকে দেখতে পাওয়া যায় না। এই অভিযানে চিনা চন্দ্রযান অবতরণস্থল থেকে ২ কেজি মাটি ও পাথর সংগ্রহ করে তার দেশে ফিরিয়ে আনবে ও সেগুলো পরীক্ষামূলকভাবে বিশ্লেষণ করবে। চাঁদের দূরতম ওই প্রান্ত এখনও মানুষের চোখে এক রহস্যময় স্থান। কারণ, আমরা কোনও দিনও ওই জায়গাটা পৃথিবী থেকে দেখতে পাইনি। চাঁদের দূরবর্তী স্থানের থেকে যে দিকটা আমরা দেখতে পাই তা আমাদের অন্বেষণ করা সহজ আর তাই চাঁদের বেশিরভাগ অভিযান তার এই সামনের দিকটি লক্ষ করে হয়েছে। চাঁদের দূরের পৃষ্ঠে রোভার বা ল্যান্ডার মিশনের ক্ষেত্রে যোগাযোগে সমস্যা দেখা যায়। পৃথিবী থেকে মিশন নিয়ন্ত্রণ এবং বার্তা পাঠানোর জন্য একটি লুনার অরবিটার প্রয়োজন হয়। চিন দেশ চ্যাং-৪ এর আগে Queqiao নামে একটি রিলে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে এবং চ্যাং-৬ এবং পরবর্তী মিশনের জন্য প্রস্তুত করার জন্য গত মার্চ মাসে চঁদের কক্ষপথের দিকে আরেকটি, Queqiao-২ প্রেরণ করেছে। চ্যাং-৬ চারটি উপাদান নিয়ে গঠিত: লুনার অরবিটার, ল্যান্ডার, অ্যাসেন্ডার এবং একটি আর্থ-রিএন্ট্রি মডিউল। যদি সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী চলে তবে সংযুক্ত অ্যাসেন্ডার সহ ল্যান্ডারটি সৌরজগতের সবচেয়ে বড়ো ইমপ্যাক্ট ক্রেটারের মধ্যে অন্যতম, অ্যাপোলো ক্র্যাটারের অভ্যন্তরে পৌঁছবে। দক্ষিণ মেরুর অ্যাটকেন বেসিন প্রায় ২৫০০ কিলোমিটার প্রশস্ত, এবং এর প্রাচীন, বিক্ষিপ্ত শিলা চাঁদের প্রাথমিক ইতিহাস এবং বিবর্তন সম্পর্কে সূত্র ধরে। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, রকেট থেকে চন্দ্রযানটি বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরে ৪ থেকে ৫ দিন লাগবে চাঁদে পৌঁছতে। জুন মাসে চাঁদে অবতরণ করবে সে। চিনা চন্দ্রযানটি তার পর দু’দিন ধরে মাটি খুঁড়ে নমুনা সংগ্রহ করবে। চ্যাং-৬ ল্যান্ডারটি প্রায় ২ কিলোগ্রাম চন্দ্রের মাটির নমুনা ও শিলা সংগ্রহ করবে। তার পর ফের পৃথিবীর উদ্দেশে রওনা দেবে।