বিজ্ঞানীরা বিশ্বের সবচেয়ে পাতলা সোনার পাত তৈরি করেছেন, যা মাত্র এক পরমাণু পুরু। সুইডেনের লিঙ্কপিং ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক শুন কাশিওয়ায়া এবং তার সহকর্মীরা নেচার সিন্থেসিস জার্নালে তাদের এক পরমাণু পুরু গোল্ডেন আবিষ্কারের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। সোনার এই পাত তৈরি করতে, ধাতুর একক স্তরকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য জাপানি লৌহকারদের ব্যবহৃত ১০০ বছরের পুরানো কৌশল তারা গ্রহণ করেছিলেন। ২০০৪ সালে গ্রাফিন আবিষ্কার হয়েছিল, আর গবেষকরা বর্তমানে ২০২৪ সালে সোনার একক পরমাণুর সমান পাতলা স্তর গোল্ডেন আবিষ্কার করেছেন। গবেষকরা অপটিক্যাল, ইলেকট্রনিক এবং অনুঘটক বৈশিষ্ট্যের জন্য দ্বি-মাত্রিক উপকরণ আবিষ্কারে আগ্রহী। ২০০৪ সালে গ্রাফিন আবিষ্কারের পর থেকে নানা দ্বিমাত্রিক পদার্থে আবিষ্কার হয়েছে। তবে এই উপাদানগুলো বেশিরভাগই অধাতু বা মিশ্র যৌগের পাতলা দ্বিমাত্রিক পাত। কিন্তু বিশুদ্ধ ধাতুর একক-পরমাণুর পাত তৈরি করা অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং। কারণ ধাতুর অণুর মধ্যে বন্দন খুব দৃঢ় হয়ে থাকে। আগে গোল্ডেনের এই পাতলা পাত তৈরি করতে গ্রাফিনের আস্তরণ দেওয়া সিলিকন কার্বাইডের মধ্যে এই পাতলা পাত তৈরি করা গিয়েছিল। তা যেন স্যান্ডউইচের পুরের মতো থাকত, যাকে আর আলাদা করা যেত না। বর্তমান গবেষণায় প্রাপ্ত গোল্ডেন পাতগুলো ১০০ ন্যানোমিটার লম্বা এবং সাধারণ সোনার পাতের চেয়ে শতগুণ পাতলা আর অন্য কোনো ধাতু বা অধাতু থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে।
কাশিওয়ায়া জানিয়েছেন, গোল্ডনের রাসায়নিক প্রতিক্রিয়ার কারণে, এটা কার্বন ডাই অক্সাইডকে ইথানল এবং মিথেনের মতো জ্বালানীতে রূপান্তর করতে ও জলকে হাইড্রোজেনে পরিণত করার মতো প্রতিক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারবে। গবেষকরা গোল্ডেনের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্ম বোঝার চেষ্টা করছেন। তারা এই পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে আরও নতুন দ্বিমাত্রিক উপাদান বানাতে চাইছেন। তাদের পরবর্তী লক্ষ্য হল রূপোর একক পরমাণু পাত তৈরি করা ।