কোনওআবিষ্কার কীভাবে সমাজে যুগান্তকারী হয়ে উঠতে পারে, তার আদর্শ উদাহরণ হলো লেজার রশ্মি।
১৯৬০ সালের এই দিনে প্রথমবার পরীক্ষাগারে পদার্থবিজ্ঞানী থিওডর মাইমান সফলভাবে লেজার রশ্মি তৈরি করতে সক্ষম হন। ৬৯৪ ন্যানোমিটারের লাল সেই লেজারটি ছিল আলোক-প্রযুক্তির পথে তৎকালীন সময়ের অন্যতম বড় একটি আবিষ্কার। ২০১৮ সাল থেকে প্রতিবছর ১৬ মে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক আলো দিবস।
ইবনে আল হাইথাম থেকে আইনস্টাইন হয়ে থিওডর মাইমান – আলোক বিজ্ঞানের ইতিহাসও কম আলোকিত নয়। তবে আন্তর্জাতিক আলোক দিবসের উদ্দেশ্য শুধু বিজ্ঞান নয় বরং শিল্প-সংস্কৃতি এবং উন্নয়নসহ সকল ক্ষেত্রে সাধারণ অর্থে আলোর প্রয়োগ নিয়েই আলোক দিবস।
সমস্ত আলো সূর্য থেকে আসে, যা বৈজ্ঞানিকভাবে সূর্যের ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক বর্ণালী হিসাবে পরিচিত। আমরা সাধারণত যখন আলোর কথা বলি, তখন দৃশ্যমান ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক বর্ণালী থেকে প্রাপ্ত আলোর কথাই বলি। কিন্তু কিছু ধরনের আলো দেখা যায় না। রেডিও তরঙ্গ, মাইক্রোওয়েভ, ইনফ্রারড রে, অতিবেগুনী রশ্মি, এক্স-রে এবং গামা-রশ্মিও রয়েছে – এগুলো আমরা চোখে দেখতে পাই না। আধুনিক প্রযুক্তির প্রতিটি বিষয়ের সঙ্গেই জড়িয়ে আছে আলো। আজ আমাদের বাড়িতে ইন্টারনেটের জন্য যে ফাইবার অপটিকাল কেবল বা মোবাইল, কম্পিউটার – সবকিছুর চালিকা শক্তি আলো। উন্নতমানের ওষুধ, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং শক্তি উৎপাদনে ফোটোনিকসের ব্যবহার থেকে আমরা লাভবান হচ্ছি। রিমোট সেন্সিং প্রযুক্তি আমাদের দিয়েছে সুস্থায়ী কৃষিব্যবস্থা। দৃষ্টি শক্তি থেকে মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট – আলোক কণার ব্যবহার তো আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সর্বত্র।
আলো আসলে একটা বৃহত্তর প্রতীক। আলো মানুষের শিক্ষা, সংস্কৃতিতে যুগ যুগ ধরে প্রভাব ফেলে আসছে। যদিও আমরা সব আলো ছাপিয়ে এক অর্থে অন্ধকারে। কতটা অন্ধকারে বুঁদ হয়ে গেলে দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে, আত্মঘাতী হয়ে রাম-হনুমান আর ধর্মের মাঝে আলোর দিশা খুঁজতে হয়! এর পরিমাপ করবে কোন আলোক রশ্মি! আন্তর্জাতিক আলোক দিবসে আমাদেরও আলোয় ফেরা দরকার।