ই-সিগারেটে অভ্যস্ত কিশোর কিশোরীদের প্রস্রাবে ইউরেনিয়াম এবং সীসার মাত্রা বেশি পাওয়া গেছে

ই-সিগারেটে অভ্যস্ত কিশোর কিশোরীদের প্রস্রাবে ইউরেনিয়াম এবং সীসার মাত্রা বেশি পাওয়া গেছে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২ মে, ২০২৪

ই-সিগারেট ধূমপান ছাড়ার জন্য ব্যবহার করা হয় কিন্তু আমেরিকাতে সমীক্ষায় দেখা গেছে, হাই স্কুলের ১০ শতাংশ কিশোর কিশোরী অন্তত মাসে ২০ দিন ই-সিগারেট ব্যবহার করে। তাদের মধ্যে ৯০ শতাংশ জানিয়েছে তারা ই-সিগারেটে ফ্লেভারওলা পণ্য ব্যবহার করতে ভালোবাসে। নেব্রাস্কা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের নেতৃত্বে এক গবেষণায় দেখা গেছে যে ১৩ থেকে ১৭ বছর বয়সের মধ্যে নিয়মিতভাবে যারা দিনে অন্তত আটবার ই-সিগারেট ব্যবহার করে, তাদের প্রস্রাবে, তাদেরই সমবয়সী যারা মাঝে মাঝে ই-সিগারেট ব্যবহার করে তাদের তুলনায় ৩০ শতাংশ বেশি সীসা এবং দ্বিগুণ ইউরেনিয়াম থাকে। ই-সিগারেট নিকোটিন মুক্ত হলেও এর রাসায়নিকে আর্সেনিক, ক্রোমিয়াম, নিকেল, সীসা, ইউরেনিয়ামের মত ক্ষতিকারক পদার্থ থাকে। যার মধ্যে সীসা ও ও ইউরেনিয়াম মানুষের বিকাশের জন্য ক্ষতিকারক। গবেষকরা জানিয়েছেন, ই-সিগারেটে কী ধরনের পদার্থ থাকে তা এখনও পুরোপুরি জানা যায়নি। তবে তামাক বা পুদিনার ফ্লেভার মিষ্টি ফেভারের তুলনায় বেশি ক্ষতিকারক।
যে কিশোর-কিশোরীরা মেনথল বা পুদিনার বদলে মিষ্টি ফ্লেভার পছন্দ করে তাদের ইউরেনিয়ামের বায়োমার্কার বিশেষত বেশি পাওয়া গেছে। ই-সিগারেট ব্যবহার করেনা, টিনএজারদের মধ্যে এমন কোনো কন্ট্রোল গ্রুপ গবেষণায় পাওয়া যায় নি। কিন্তু ২০০ ই-সিগারেট ব্যবহারকারী মার্কিন কিশোর কিশোরীর নমুনা থেকে পাওয়া প্যাটার্ন উদ্বেগজনক। জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে, গবেষকরা ই-সিগারেটের সম্ভাব্য বিষাক্ততা তদন্তের পক্ষে যুক্তি দেন। এই ছোটো মাপের গবেষণার ফলাফল থেকে প্রমাণ হয় না যে ই-সিগারেটের ধোঁয়া থেকে শরীরে বিষাক্ত ধাতু জমা হয়। কিন্তু ধারাবাহিকভাবে পূর্ববর্তী বিশ্লেষণ দেখায় ই-সিগারেটের অ্যারোসল নমুনায় এবং ধোঁয়ায় শারীরিক তরলে বিষাক্ত ধাতুর নমুনা পাওয়া গেছে। কখনও কখনও ই-সিগারেটের ধোঁয়া থেকে রক্ত ও প্রস্রাবের নমুনায় সিগারেটের মতোই বিষাক্ত পদার্থ পাওয়া যায়। মিষ্টি ফ্লেভারে ইউরেনিয়াম বায়োমার্কার বৃদ্ধি বিশেষ উদ্বেগজনক কারণ ক্যান্ডি-গন্ধযুক্ত ই-সিগারেট পণ্যগুলো কিশোর কিশোরীরা বেশি ব্যবহার করে। বর্তমান গবেষণার লেখকরা সতর্ক করেছেন, ই-সিগারেটের মিষ্টি স্বাদ নিকোটিনের কড়া স্বাদ চাপা দিতে পারে। এতে এর শক্তিশালী প্রভাবগুলো বাড়ে, যার ফলে মস্তিষ্কের কিউ-রিঅ্যাকটিভিটি বৃদ্ধি পায়। কিউ অ্যারিক্টিভিটি হল এমন ধরনের প্রতিক্রিয়া যা নেশার আসক্তিযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে দেখা যায়। তাদের নেশা সম্পর্কিত উদ্দীপনায় শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন দেখা যায়। এই আসক্তি কিশোর কিশোরীদের মধ্যে বেশ বিপজ্জনক। গবেষণাটি টোব্যাকো কন্ট্রোলে প্রকাশিত হয়েছে।