ভারতে দেখা গেছে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে বেশি উচ্চতায় বসবাসকারী শিশুদের বৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষত যে সমস্ত শিশুরা পার্বত্য অঞ্চলের উচ্চস্থানে গ্রামীণ এলাকায় বসবাস করে তাদের বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়ার ঝুঁকি অপেক্ষাকৃত বেশি। BMJ নিউট্রিশন প্রিভেনশন অ্যান্ড হেলথ-এ প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে ২০০০ মিটার বা তার বেশি উচ্চতায় বসাবাসকারী শিশুদের ১০০০ মিটারের নীচে বসবাসকারীদের তুলনায় ৪০% বেশি ঝুঁকি থাকে। এইজন্য গবেষকরা দেশের পার্বত্য ও পার্বত্য অঞ্চলে পুষ্টি কর্মসূচীকে অগ্রাধিকার দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। বিভিন্ন উদ্যোগ সত্ত্বেও, দীর্ঘস্থায়ী অপুষ্টির কারণে শৈশবে বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়া ভারতে একটা প্রধান জনস্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জ গেছে, যা ৫-বছর বয়সী এক তৃতীয়াংশেরও বেশি শিশুদের প্রভাবিত করে।
অন্যান্য দেশের গবেষণা বসবাসের স্থানের উচ্চতা এবং বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়ার মধ্যে একটি যোগসূত্র নির্দেশ করে। ভারতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২৫০০ মিটারেরও বেশি উচ্চতায় বাস করে। সেক্ষেত্রে ভারতে শিশুর বৃদ্ধি ও উচ্চতায় বাস করার সম্পর্ক নিয়ে অন্বেষণ করার জন্য গবেষকরা ২০১৫-১৬ সালের জাতীয় পারিবারিক স্বাস্থ্য জরিপ (NFHS-4), ভারতের একটি জাতীয় প্রতিনিধি পরিবারের সমীক্ষা, তার থেকে ৫ বছরের কম বয়সী ১৬৭৫৫৫ জন শিশুর তথ্য নেন। গবেষকরা উচ্চতা স্তর জানতে জিপিএস ডেটা ও বৃদ্ধি ব্যাহত বোঝার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)-র নির্দেশক ব্যবহার করেছিলেন।
এই শিশুদের মধ্যে বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়ার প্রবণতা ১৮-৫৯ মাস বয়সী শিশুদের মধ্যে বেশি। প্রথম সন্তানের তুলনায় তৃতীয় সন্তান বা চতুর্থ সন্তানের বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। যে শিশুরা বেশ ছোটো অবস্থায় জন্মগ্রহণ করছে তাদের বৃদ্ধির হার কম। দেখা গেছে মায়েদের শিক্ষার সাথে শিশুর বৃদ্ধির সম্পর্ক রয়েছে। মায়েদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বৃদ্ধির সাথে শিশুর কম বৃদ্ধির প্রবণতা হ্রাস পেয়েছে। শিশুর ক্ষেত্রে প্রতিরক্ষামূলক যে সমস্ত কারণ ছিল তা হল প্রসবপূর্ব যত্ন, যেমন ক্লিনিক পরিদর্শন, টিটেনাস টিকা এবং আয়রন এবং ফলিক অ্যাসিড সম্পূরক; স্বাস্থ্য সুবিধার নৈকট্য। সাম্প্রতিক দশকগুলোতে ভারতে জনস্বাস্থ্যের কাজ পুষ্টির সমস্যা যেমন আয়োডিনের ঘাটতি, যা উচ্চ উচ্চতায় বসবাসের সাথে জড়িত তার মোকাবিলা করেছে। গবেষকরা জানিয়েছেন, শিশুর ব্যাহত বৃদ্ধি রোধের জন্য স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সেক্টর জুড়ে সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন, যা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ শিশুদের লক্ষ্য করে কাজ করবে।