জেগে থাকার সময়ে চোখের পলক পড়ার জন্য আমাদের আনুমানিক ১০ শতাংশ সময় চোখ বন্ধ থাকে। চোখ খুলে রাখার অযথা চেষ্টা করলে, চোখ জলে ভরে যায়, আর যেই আমাদের চোখের পাতা পড়ে, চোখের অক্ষিগোলোক তরলে ধুয়ে যায় আর তাতে আমাদের চোখ ভারি স্বস্তি পায়। চোখের পলক পড়লে যেমন চোখ ভিজে যায় তেমন এটা দৃষ্টিশক্তিত বাড়াতেও সাহায্য করে। রচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোসায়েন্টিস্ট বিন ইয়াং এবং সহকর্মীরা তাদের গবেষণায় বলেছেন চোখের তৈলাক্তকরণের জন্য যা প্রয়োজন তার তুলনায় আমরা চোখের পলক বেশি ফেলি। তারা বলছেন চোখের পলক পড়া রেটিনাল উদ্দীপনার শক্তি বাড়ায় যার ফলে দৃষ্টিশক্তি বাড়ে।
আমরা প্রতিবার পলক ফেলার সময় ৩০০-মিলিসেকেন্ডের জন্য আমাদের দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলি। আমাদের মনে হওয়া স্বাভাবিক এতে যে সমস্ত নিউরন দেখতে সাহায্য করে, তাদের কার্যকলাপে বাধা পড়ে। কিন্তু বাস্তবে তা হয় না, আগে গবেষণায় জানানো হয়েছিল, চোখের পলক পড়লে তা আমাদের মনোযোগ বাড়ায়, বস্তু চিনতে সাহায্য করে আর টানা দর্শন এবং শ্রবণ তথ্যের বদলে তা ভেঙে ফেলে খন্ডে খন্ডে প্রক্রিয়াকরণ করতে সাহায্য করে। ২০১৬ সালে এক সমীক্ষায় দেখা গেছে যে চোখের পাতা বন্ধ হওয়ার সাথে সাথে স্নায়বিক কার্যকলাপ হ্রাস পেলেও একটা পলক ফেলার সাথে সাথেই স্নায়বিক কার্যকলাপ উচ্চ স্তরে ফিরে আসে, যা দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়। বর্তমান গবেষণায় উচ্চ-রেজোলিউশন আই-ট্র্যাকিং ব্যবহার করে গবেষকরা ১২ জনের দৃষ্টিশক্তিতে চোখের পলক পড়া দৃষ্টিশক্তিকে কীভাবে প্রভাবিত করছে তা দেখতে চেয়েছেন। গবেষকরা দেখতে পান যে চোখের পলকগুলো রেটিনায় পড়া আলোর তীব্রতাকে নিয়ন্ত্রণ করে ভিজ্যুয়াল ইনপুট সংকেতের শক্তি বৃদ্ধি করে। যখন অংশগ্রহণকারীদের পলক ফেলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল এবং যখন তারা স্বাভাবিকভাবে পলক ফেলেছিলেন দুক্ষেত্রেই ভিজ্যুয়াল উদ্দীপনা দেখা গিয়েছিল। অর্থাৎ চোখের পলক পড়া সংবেদনশীলতা বাড়ায়। চোখের পলক ফেলা ভিজ্যুয়াল তথ্যকে পুনঃফর্ম্যাট করতে সাহায্য করে। এই গবেষণা পিএনএএস-এ প্রকাশিত হয়েছে।