অনেক সময়ে ত্বকে, ফুসকুড়ি, চুলকানি, ছাল উঠে যাওয়া বা লাল গোল দাগ দেখা যাওয়া, যা সাধারণত দাদ নামেই পরিচিত। এর সংক্রমণ ত্বকে, নখে, এমনকি মাথার চুলেও দেখা যায়। ঠিক চিকিৎসার অভাবে ত্বকের এই রোগ সহজে সারতে চায়না। ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে অ্যান্টিফাঙ্গাল ক্রিম এবং কর্টিকোস্টেরয়েডের সাথে অ্যান্টিফাঙ্গাল চিকিত্সার ফলে ত্বক, মাথার ত্বক এবং নখের ছত্রাক সংক্রমণের বৃদ্ধি পেতে পারে। ২০২৩ সালে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞরা ওষুধ-প্রতিরোধী ছত্রাক দ্বারা সংক্রামক ত্বক সংক্রমণের কিছু কেস সনাক্ত করেছিলেন। ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ যেমন বেড়েছে, অ্যান্টিফাঙ্গালের অতিরিক্ত ব্যবহারেও সম্ভাব্য প্যাথোজেনিক ছত্রাক ওষুধপ্রতিরোধী হতে শুরু করছে। বিশেষত সংক্রমণের ধরন নির্ধারণ যদি ভুল হয়, তাতে ভুল ওষুধ দেওয়া হয় বা ঠিকভাবে ওষুধ ব্যবহার না করা হলেও ছত্রাক ওষুধপ্রতিরোধী হতে পারে।
গবেষকদের মতে ছত্রাকের প্রতিরোধ ক্ষমতার কথা মাথায় রেখে, ঠিক ওষুধ বাছা এবং রোগীকে সেই ওষুধ ব্যবহারের বিষয়ে সচেতন করা প্রয়োজন। ২০২১ সালে, আমেরিকায় ন্যাশানাল হেলথ ইন্স্যুরেন্স প্রোগ্রামের ১০ লক্ষ স্বাস্থ্যকর্মী প্রায় ৪৯০ লক্ষ রোগী দেখেছেন, তার মধ্যে ৬৫ লক্ষ রোগীকে অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ লাগাতে দেওয়া হয়েছিল। তবে গবেষকদের মতে এর থেকে অনেক বেশি অ্যান্টিফাঙ্গাল ব্যবহার করা হয়, কারণ এই ওষুধ যে কেউ প্রেসক্রিপশন ছাড়া দোকান থেকে কিনতে পারেন। ২০২১ সালে ৪০ শতাংশ অ্যান্টিফাঙ্গাল প্রেসক্রিপশন প্রাথমিক চিকিত্সকরা করেছিলেন, বাকি রোগীদের প্রেসক্রিপশন নার্স, চর্মরোগ বিশেষজ্ঞদের করা। ১৩১০৬ জন স্বাস্থ্যকর্মীর করা ১০ শতাংশ অ্যান্টিফাঙ্গাল প্রেসক্রিপশনে মোট ওষুধের প্রায় অর্ধেক ওষুধ লেখা হয়েছে। এর কারণ হয়তো তারা সন্দেহভাজন ছত্রাক সংক্রমণে আক্রান্ত অনেক রোগী দেখেছিলেন বা দ্রুত তাদের চিকিত্সা করার চেষ্টা করেছিলেন। অত্যধিক ব্যবহারজনিত ওষুধবহুল প্রেসক্রিপশনের ইঙ্গিত থাকলেও, মেডিকেয়ার ডেটাতে রোগীদের ছত্রাকের সংক্রমণের ধরন সম্পর্কে ডায়গনিস্টিক তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। ফলে গবেষকরা নির্ধারণ করতে পারেননি যে রোগীদের চিকিত্সার জন্য সঠিক ওষুধ দেওয়া হয়েছিল কিনা। অথবা ডাক্তাররা ওষুধ লেখার আগে সংক্রমণ পরীক্ষা করেছিলেন কিনা। ক্লোট্রিমাযোল-বিটামেথাসোন, এই দুটি ওষুধ ১৫% রোগীর ক্ষেত্রে দেওয়া হয়েছিল যার থেকে ওষুধ প্রতিরোধী টিনিয়া যা ডারমাটোফাইসিস নামে পরিচিত, তার বিস্তার হচ্ছে বলে গবেষকদের ধারণা। যা আমাদের কাছে দাদ হিসেবে পরিচিত। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডাক্তাররা পরীক্ষা না করেই শুধু চোখে দেখে ছত্রাক সংক্রমণে ওষুধ দিয়েছেন, গবেষকরা যার পক্ষপাতী নন।