এক শৃঙ্গ গণ্ডারের জন্য বিখ্যাত আসামের কাজিরাঙ্গা জাতীয় উদ্যানে দুটো নতুন স্তন্যপায়ী প্রাণী আবিষ্কার করা গেছে। এই দুটি স্তন্যপায়ী প্রাণী হল বিন্টুরং (আর্কটিস বিন্টুরং), যা ভারতের বৃহত্তম সিভেট বা বিয়ারক্যাট নামে পরিচিত এবং ছোট নখরযুক্ত ওটার (অনিক্স সিনেরিয়াস)। ১৯৮৫ থেকে ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট অনুযায়ী কাজিরাঙ্গা জাতীয় উদ্যানের প্রধান ৫টা পশু হল, ভারতীয় এক- শৃঙ্গ গন্ডার (রাইনোসেরাস ইউনিকর্নিস), ভারতীয় হাতি (এলিফাস ম্যাক্সিমাস), বেঙ্গল টাইগার (প্যান্থেরা টাইগ্রিস), জলের বন্য মহিষ (বুবালাস বুবালিস), এবং পূর্বাঞ্চলীয় জলাভূমির হরিণ (সারভাস ডুভাউসেলি)। মূলত দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অধিবাসী বিন্টুরং, স্তন্যপায়ী প্রাণীটি বৃক্ষে বসবাস করে। বিন্টুরং এর নিশাচর হওয়ার জন্য এবং বৃক্ষে থাকার জন্য এদের দেখা সহজে পাওয়া যায় না। কাজিরাঙ্গার কর্মকর্তারা বলেছেন যে দুটি প্রজাতি সাম্প্রতিক গণনার সময় রেকর্ড করে, ১৩০২ বর্গ কিলোমিটার বাঘ সংরক্ষণ এলাকায় স্তন্যপায়ী প্রাণীর সংখ্যা ৩৭-এ পৌঁছেছে। ১০ই জানুয়ারি বাঘ সংরক্ষণ এলাকায় পঞ্চমবার পরিযায়ী পাখি গণনার সময় বিন্টুরং-এর ছবি তোলা হয়েছিল।
আসাম বন বিভাগের সহযোগিতায় ওয়াইল্ডলাইফ ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া দ্বারা পরিচালিত অফিসার এবং ফ্রন্টলাইন কর্মীদের জন্য একটি সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামের পরে ছোট নখরযুক্ত ওটারটিকে দেখা গেছে, এটি ওটারের সবচেয়ে ছোটো প্রজাতি। এশিয়ান স্মল ক্লড ওটার, ভোঁদড় জাতীয় স্তন্যপায়ী প্রাণীটি একটি বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে ভারতের পূর্ব দিকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অবধি এবং দক্ষিণ চীন পর্যন্ত বিস্তৃত। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, অরুণাচল প্রদেশ, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু এবং পশ্চিমঘাট অঞ্চলে কেরালার কিছু অংশে সংরক্ষিত অঞ্চলে এদের দেখা পাওয়া যায়। এই ওটারের ছোট নখরযুক্ত পায়ে আংশিকভাবে লিপ্তপদ থাকে, তাই এরা জলজ পরিবেশে দক্ষ শিকারী হয়ে ওঠে। এদের মিষ্টি জলের আবাসস্থলে পাওয়া যায়, সেখানে এরা মাছ, ক্রাস্টেসিয়ান যেমন কাঁকড়া, চিংড়ি এবং মলাস্ক অর্থাৎ শামুক, গুগলি খায়।
এছাড়া কাজিরাঙ্গাতে আরও যে যে প্রাণী দেখা যায়, তারা হল ভারতীয় বন্য শূকর (সুস স্ক্রোফা), ভারতীয় গৌড় (বস গৌরাস), সাম্বার (সারভাস ইউনিকলার), হুলক বা সাদা-ব্রাউড গিবন (হাইলোবেটস হুলক), গাঞ্জেটিক ডলফিন (প্ল্যাটানিস্টা গ্যাঙ্গেটিকা), ক্যাপড ল্যাঙ্গুর (প্রেসবিটিস পাইলেটাস), স্লথ বিয়ার (মেলুরস আরসিনাস), চিতাবাঘ (প্যান্থেরা পারডাস), এবং খেঁকশিয়াল (ক্যানিস অরিয়াস)।