নতুন গবেষণায় বলা হচ্ছে নিয়মিত ব্যায়াম করলে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সুবিধার পাশে মস্তিষ্কের আয়তন বাড়ে যাতে স্মৃতিশক্তি এবং শেখার ক্ষমতার জন্য দায়ী অংশগুলির আকার বাড়ে এবং তা সক্রিয় থাকে। আর গবেষণায় যা ভালো বিষয় উঠে এসেছে তা হল, মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলার জন্য অত্যধিক তীব্র বা দীর্ঘায়িত ব্যায়ামের দরকার পড়ে না।
গবেষণায় ১০১২৫ জনের মস্তিষ্কের ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স ইমেজিং (MRI) স্ক্যান করা হয়েছে, যারা জানিয়েছেন তারা নিয়মিত কোনো না কোনো ধরনের শারীরিক কার্যকলাপে নিযুক্ত, যেমন হাঁটা, দৌড়ানো বা খেলাধুলা। দেখা গেছে তাদের মস্তিষ্কে নির্দিষ্ট অংশের পরিমাণ বেশি ছিল। এই অংশগুলির মধ্যে ‘সিদ্ধান্ত গ্রহণ’করার জন্য দায়ী ফ্রন্টাল লোব এবং হিপ্পোক্যাম্পাস অন্তর্ভুক্ত ছিল। এটি মস্তিষ্কের এমন একটি অংশ যা স্মৃতিগুলি কীভাবে সংরক্ষণ করা হয় এবং পরিচালনা করা হয় তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণায় প্রতিটি মস্তিষ্কের ধূসর পদার্থের মোট আয়তনও পরিমাপ করা হয়েছে, যা মস্তিষ্কের তথ্য প্রক্রিয়াকরণে সাহায্য করে। PBHC-এর মনোরোগ বিশেষজ্ঞ এবং নিউরোসায়েন্টিস্ট ডেভিড মেরিল বলেছেন যে মাঝারি মাত্রার শারীরিক ক্রিয়াকলাপ, যেমন দিনে ৪০০০-এর কাছাকাছি পা হাঁটলেও মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের উপর ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এর জন্য দিনে ১০০০০ পা না হাঁটলেও চলে।
যদিও মস্তিষ্কের আয়তন থেকেই মস্তিষ্কের উন্নত কার্যকারিতা নির্দেশ করা যায় না। তবে এটি জ্ঞানীয় ক্ষমতার পরিবর্তনের একটি ন্যায্য সূচক হিসাবে নেওয়া হয়। এই মস্তিষ্কের আয়তন বৃদ্ধি কীভাবে নিয়মিত ব্যায়াম করা ব্যক্তিদের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করে তা নিয়ে এই অধ্যয়ন বিশদে না জানালেও, গবেষকরা জানিয়েছেন, এটা আগেই জানা এই অঞ্চলগুলি কোন কাজের জন্য দায়ী, তাই স্মৃতিশক্তি এবং শেখার উন্নতি হতে পারে। নিয়মিত ব্যায়াম, অঙ্গ সঞ্চালন স্নায়বিক ক্রিয়াকলাপকে চাঙ্গা করে তুলতে পারে, যেমন ব্যায়াম মস্তিষ্ক সহ শরীরের সর্বত্র রক্ত প্রবাহ উন্নত করে, কিছু প্রোটিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে যা নিউরনগুলিকে সুস্থ রাখে।
আমাদের বয়স বাড়ার সাথে সাথে এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে, কারণ নিউরোডিজেনারেটিভ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এটা মনে করা হয় যে বড়ো আয়তনের মস্তিষ্ক জ্ঞানীয় পতনকে বিলম্বিত করতে সাহায্য করতে পারে যার ফলে অ্যালজাইমার্সের মতো রোগ সহজে হয় না। গবেষণাটি জার্নাল অফ অ্যালজাইমার্স ডিজিজে প্রকাশিত হয়েছে।