পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে জল গ্রহের গভীর অঞ্চলে জমা হচ্ছে এবং নতুন গবেষণা ব্যাখ্যা করে কিভাবে এটি পৃথিবীর ধাতব তরল কোরের বাইরের অঞ্চলের পরিবর্তন ঘটাচ্ছে। অনুসন্ধানটি গ্রহের অভ্যন্তরে একটি পাতলা উপাদানের স্তরের উপস্থিতি ব্যাখ্যা করেছে যা কয়েক দশক ধরে ভূতাত্ত্বিকদের কাছে রহস্যময়। পৃথিবীর ভূত্বক টেকটোনিক প্লেট দ্বারা গঠিত যা একে অপরকে পিষতে থাকে আর একে অন্যের ওপর হড়কে যেতে থাকে। কোটি কোটি বছর ধরে, এই সাবডাকশন জোনগুলি পৃথিবীর নীচের আবরণে জল পরিবহন করে চলেছে।
যখন এই জল পৃষ্ঠের নীচে প্রায় ২৯০০ কিলোমিটার কোর-ম্যান্টল সীমানায় পৌঁছোয় তখন এটি একটি শক্তিশালী রাসায়নিক মিথস্ক্রিয়া করে। দক্ষিণ কোরিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জার্মানির একটি দল দেখিয়েছে যে জল হাইড্রোজেন সমৃদ্ধ একটি শীর্ষ কোর স্তর তৈরি করে এবং নীচের আবরণে সিলিকা পাঠায়। জল যখন কোর-ম্যান্টল সীমানায় পৌঁছোয়, তখন এটি কোরের সিলিকনের সাথে বিক্রিয়া করে, সিলিকা তৈরি করে।
লোহা এবং নিকেলের বাইরের কোরের মিশ্রণ পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা মূলত সৌর বায়ু এবং বিকিরণ থেকে আমাদের গ্রহের জীবনকে রক্ষা করে। সুতরাং এটি বোঝা গুরুত্বপূর্ণ যে পৃথিবীর আভ্যন্তরীণ অঞ্চল কীভাবে কাজ করে এবং তা সময়ের সাথে সাথে কীভাবে বিবর্তিত হয়েছে। পৃথিবীর মূল-ম্যান্টল সীমানা সিলিকেট থেকে ধাতুতে বেশ তীব্রভাবে পরিবর্তিত হয় এবং এই রাসায়নিক বিনিময় সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানা যায় না।
কয়েক দশক আগে, গবেষকরা পৃথিবীর ভিজে জবজবে অভ্যন্তরে ভূমিকম্পের তরঙ্গ রেকর্ড করে মাত্র কয়েকশো কিলোমিটার পুরু একটি পাতলা স্তর নথিভুক্ত করেছিলেন, কিন্তু এই প্রস্তাবিত ‘ই প্রাইম’ স্তরটি কোথা থেকে এসেছে তা বোঝা যায়নি। গবেষকদের পরামর্শ হল কোটি বছর ধরে কোর এবং ম্যান্টলের মধ্যে জলের গভীর পরিবহনের ফলে এই জাতীয় রাসায়নিক বিনিময় এই ‘ই প্রাইম স্তর’ গঠনে অবদান রাখতে পারে। সিসমোলজিস্টরা কিছু অস্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য ম্যাপ করেছেন যা পরামর্শ দেয় যে এই পরিবর্তিত তরল ধাতব স্তর কম ঘন হবে এবং ভূমিকম্পের গতি ধীর থাকবে। হাইড্রোজেন-সমৃদ্ধ, কম সিলিকন উপাদানের স্তর কোরের শীর্ষে তৈরি হয় যার ঘনত্ব কম এবং কম গতি থাকে যা সিসমিক তরঙ্গ পর্যবেক্ষণের সাথে মিলে যায়। পরিবর্তিত মূল ফিল্মটি গভীর জলের চক্রের উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে এবং দলটি বলে যে তাদের ফলাফলগুলি এক জটিল বৈশ্বিক জল চক্রের পরামর্শ দেয়।