২০১৮ সালে ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নাসা) নিশ্চিত করেছে যে শনি গ্রহ দ্রুত গতিতে তার বলয় হারাচ্ছে। এই বলয় শত সহস্র ছোটো ছোটো বরফ এবং শিলা দিয়ে তৈরি। গ্রহের মাধ্যাকর্ষণ তার চারপাশের বলয় থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে বরফ টেনে নিচ্ছে যা দিয়ে অলিম্পিক খেলায় ব্যবহৃত সম আকারের একটি সুইমিং পুল আধা ঘণ্টায় ভরে যেতে পারে। যদিও বলয়গুলো সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিহ্ন হতে অনেক সময় লাগবে, তবুও এগুলো ধীরে ধীরে পৃথিবী থেকে আর দৃশ্যমান হবে না। ১৬১০ সালে গ্যালিলিও প্রথম ব্যক্তি ছিলেন যিনি শনি গ্রহের এই সুন্দর বলয়গুলো তার টেলিস্কোপের সাহায্যে পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। আজ যে কোনো ব্যক্তি মৌলিক কিছু উপকরণের সাহায্যে শনির বলয় দেখতে পারেন। কিন্তু আর্থ ডটকম অনুসারে, ২০২৫ সালের প্রথম দিকে, শনি গ্রহ পৃথিবীর সাথে এমনভাবে অবস্থান করবে যে বলয়গুলো পৃথিবী থেকে আর দেখা যাবে না। যেমন এক টুকরো কাগজ যদি মাটির সমান্তরালে আমাদের চোখের স্তরে কয়েকশো মিটার দূরে রাখা হয় তবে ওই কাগজের টুকরোটি চিহ্নিত করা বেশ কঠিন হবে। ঠিক তেমনই ২০২৫ সালে শনির বলয় চিহ্নিত করা অনেক বেশি কঠিন হয়ে যাবে। তবে আমাদের অর্থাৎ পৃথিবীবাসীদের চিন্তার কোনো কারণ নেই। এই ঘটনাটি বেশি দিন স্থায়ী হবে না। সূর্যের চারপাশে প্রদক্ষিণ করতে শনি গ্রহের প্রায় ২৯.৪ পৃথিবী বছর সময় লাগে। এবং সেই সময়ে, এটি তার বলয়ের অন্যদিক প্রদর্শন করতে কাত হবে৷ আর এর ফলে আমরা এই গ্রহের চাঁদগুলোকে আরও ভালোভাবে দেখতে পাবো।
মহাকর্ষের কারণে গ্রহে বলয় থেকে যে পরিমাণে উপাদান খসে পড়ছে তাতে নাসার বিজ্ঞানীরা অনুমান করেছেন যে বলয়গুলো খুব বেশি হলে আর ১০০ মিলিয়ন বছর থাকবে। যদিও আমাদের কাছে এই সময়টা বেশ দীর্ঘ বলে মনে হতে পারে কিন্তু শনি গ্রহের বয়স প্রায় ৪ বিলিয়ন বছর এবং এই বলয়গুলো কোনোভাবেই ১০০ মিলিয়ন বছরের বেশি পুরানো হওয়ার সম্ভাবনা নেই। ফলত আমাদের সৌরজগতের একটি দৈত্যাকার গ্রহের চারপাশে এই বলয় একটি ক্ষণস্থায়ী ঘটনা ছাড়া আর কিছুই নয়।