জলের তাপমাত্রা অত্যাধিক গরম হয়ে গেলে মাছেদের পক্ষে সেই তাপে বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে, মাছেরা প্রাণ হারাতে থাকে। ফলত নদীতে, আটলান্টিক স্যালমন বা অন্যান্য শীতল-জলের মাছ কখনও কখনও তাপ থেকে বাঁচতে ঝাঁকে ঝাঁকে ঠাণ্ডা জলের দিকে ধাবিত হয়, যা প্রায়শই ভূগর্ভস্থ জলের ফোয়ারা বা অপেক্ষাকৃত শীতল উপনদীর কাছে দেখা যায়।
কানাডার হ্যালিফ্যাক্সের ডালহৌসি ইউনিভার্সিটির স্মিথ বলেছেন, এই সব প্রজাতির মাছেদের সংরক্ষণ এবং সংখ্যায় বৃদ্ধি করার জন্য অনেক ধরনের কাজ করা হয়েছে, কিন্তু মাছেদের জন্য শীতল জলের আবাসস্থল তৈরি করা যায় কিনা সেদিকে তেমনভাবে সত্যিই জোর দেওয়া হয়নি। তাই তিনি এবং তার সহকর্মীরা কাছাকাছি একটি কূপ থেকে প্রায় ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিশিষ্ট্য ভূগর্ভস্থ জল নদীতে পাম্প করে যার ফলে একটি কৃত্রিম জলের স্রোত তৈরি হয় যা আশেপাশের জলের চেয়ে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস শীতল৷ গবেষকরা গ্রীষ্মকালে রাইটস নদীতে ভূগর্ভস্থ জল পাম্প করেন যাতে একটি শীতল জলের স্রোত তৈরি হয় এবং মাছ সেখানে আশ্রয় নিতে পারে। সেই শীতল জল স্রোত আটলান্টিক স্যালমন এবং ব্রাউন ট্রাউট সহ বিভিন্ন প্রজাতির কয়েকশত মাছ আকর্ষণ করেছিল যারা তাদের জীবন চক্রের বিভিন্ন পর্যায় অবস্থান করছিল। পরীক্ষায় দেখা গেছে যে সব মাছ ওই ঠাণ্ডা স্রোতে আশ্রয় নিয়েছিল তাদের বেশিরভাগই ছিল চারা মাছ যারা তখনও ডিমের থলির সাথে সংযুক্ত। কিন্তু যখন তাপপ্রবাহের ফলে জলের তাপমাত্রা প্রায় ৩০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে পৌঁছে যায় তখন আরও বড়ো ও পাকা মাছও সেই শীতল জলে আশ্রয় নেয়। অন্য একটি পরীক্ষায় গবেষকের দল নদীর জলকে একটি ভূগর্ভস্থ পরিখাতের মধ্যে দিয়ে নিয়ে শীতল করে পুনরায় নদীতে প্রবেশ করায়। এই পদ্ধতিতে জলের তাপমাত্রা মাত্র কয়েক ডিগ্রি সেলসিয়াস কমানো গিয়েছিল কিন্তু দলটি দেখেন যে সারা গ্রীষ্মকাল জুড়ে মাছেদের আনাগোনা ওই শীতল জল প্রবাহে দেখা গেছে। মাছের জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও তাদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য শক্তির ব্যবহার সীমিত রেখে এই ধরনের পরিকাঠামো নির্মাণ ও তার স্থায়িত্বের দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন এবং আরো বেশি গবেষণাও দরকার।