কোভিড মহামারী চলাকালীন সুপারমার্কেটের খালি তাক দেখিয়েছিল যে ইউরোপের খাদ্য সরবরাহে কীভাবে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। ভবিষ্যতে কী এই ধরনের ব্যাঘাত হতে পারে? নতুন গবেষণায় যুক্তরাজ্যের ৫৮ জন মুখ্য খাদ্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে সমীক্ষা করা হয়েছে। এই গবেষণা ইঙ্গিত দিচ্ছে যে চরম আবহাওয়ার ফলে খাদ্যের যে ঘাটতি হতে পারে তা আগামী ৫০ বছরের মধ্যে যুক্তরাজ্যে নাগরিক অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে। গম, রুটি, পাস্তা এবং সিরিয়ালের মতো প্রধান কার্বোহাইড্রেটের ঘাটতি এই ধরনের অস্থিরতার সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে হয়।
যুক্তরাজ্যের খাদ্য ব্যবস্থায় সরবরাহ চেনে ব্যাঘাত ঘটলে তাতে বিশেষ ঝুঁকি তৈরি হবে বলে মনে করা হচ্ছে। খাদ্য ব্যবস্থায় দুর্বলতার কারণ হল দক্ষতার উপরঅধিক জোর দেওয়ার জন্য মরশুমি শ্রমের উপর প্রচণ্ড নির্ভরতা এবং ঠিক যে সময়ে প্রয়োজন তখন পণ্য সঠিকভাবে সরবরাহ করা হয়, ফলে একটা স্থিতিস্থাপক খাদ্যব্যবস্থা, খাদ্যের সংগ্রহ সবসময় থাকে না। এই গবেষণার লক্ষ হল ভবিষ্যতে খাদ্য ঘাটতির সাথে যুক্ত ঝুঁকির জন্য ইউরোপকে প্রস্তুত কর, তার জন্য পরিকল্পনা তৈরির গুরুত্বের উপর জোর দিতে সাহায্য করা।
এই সমীক্ষায় ৮০ শতাংশ বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, আগামী দশ বছরের মধ্যে খাদ্য নিয়ে অস্থিরতা না দেখা গেলেও ৫০ বছরে তা তৈরি হতে পারে। আশি শতাংশ বিশেষজ্ঞ মনে করছেন খাদ্য বন্টন ব্যস্থা থেকে এই অস্থিরতা তৈরি হবে। তাদের মতে ৫০ বছর পরে ফসল উৎপাদনের হ্রাসের কারণে খাদ্যের জোগান কমবে। এই উৎপাদন হ্রাসের পিছনে কারণ হল ঘন ঘন ঝড় ঝঞ্জা, বন্যা, তুষারপাত, খরার মতো চরম আবহাওয়া।
এক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ইউরোপের বেশিরভাগ খাদ্য আমদানি মারফত দেশে আসে, যেমন ফল, সব্জির ৮০ শতাংশ, মাংসের ২০ শতাংশ। ফলে আমদানিতে বিঘ্ন ঘটলে, দাম বৃদ্ধি হবে যা থেকে সামাজিক অব্যবস্থা তৈরি হতে পারে। ইউরোপের খাদ্য ব্যবস্থার সহনশীলতা অর্থাৎ ঝুঁকি সহ্য করার দক্ষতা প্রয়োজন। এই ব্যবস্থা শক্তিশালী করার জন্য ক্ষয়প্রাপ্ত মৃত্তিকা এবং পরাগায়নকারীদের ব্যবহৃত আবাসস্থল পুনরুদ্ধার করা, খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খল উন্নত করা এবং টেকসই কৃষি অনুশীলনকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। আরও শক্তিশালী শস্যের জাত এবং প্রজাতি বৃদ্ধি করা, সম্পদগুলিকে আরও দক্ষতার সাথে ব্যবহার করা, এবং ঠিক সময়ে জোগান দেওয়ার পরিবর্তে ব্যাকআপ স্টোরেজ এবং বিতরণ ব্যবস্থা স্থাপন করা স্থিতিস্থাপক খাদ্য ব্যবস্থার মূল দিক।