জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ ডেটা ব্যবহার করে গবেষণায় ইঙ্গিত করা হয়েছে বৃহস্পতির চাঁদ ইউরোপায় শনাক্ত করা কার্বন ডাই অক্সাইড তার বরফের আস্তরণের নীচে বিস্তীর্ণ মহাসাগর থেকে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত যে ইউরোপার বরফ আচ্ছাদিত পৃষ্ঠের নীচে লোনা জলের কিলোমিটারের পর কিলোমিটার বিস্তৃত এক বিশাল মহাসাগর রয়েছে। লুকানো জলে জীবন পাওয়া যেতে পারে এমন আশা বিজ্ঞানীদের মনে সঞ্চারিত হচ্ছে। অর্থাৎ সৌরজগতে বৃহস্পতির এই চাঁদে অন্য জীবনের অস্তিত্ব পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু এই লুকানো সমুদ্রে জীবনকে সমর্থন করার জন্য রাসায়নিক উপাদান রয়েছে কিনা তা নির্ধারণ করা কঠিন। কার্বন ডাই অক্সাইড – জীবনের মূল বিল্ডিং ব্লকগুলির মধ্যে একটা – ইউরোপার পৃষ্ঠে সনাক্ত করা কার্বন ডাই অক্সাইড নীচের মহাসাগর থেকে উঠেছিল কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন রয়ে গেছে।
সবচেয়ে বেশি CO2 পাওয়া গেছে ১৮০০ কিলোমিটার-প্রশস্ত Tara Regio নামে এলাকায়, এই এলাকায় প্রচুর “ক্যাওস টেরাইন” রয়েছে যেখানে পাহাড় এবং ফাটল রয়েছে। ঠিক কীকারণে এই বিশৃঙ্খল ভূখণ্ড তৈরি হয়েছে তা ভালভাবে বোঝা যায় না, তবে একটি তত্ত্ব হল যে সমুদ্রের উষ্ণ জল ওপরে উঠে পৃষ্ঠের বরফ গলায়, যা আবার সময়ের সাথে সাথে জমাটবদ্ধ হয়ে নতুন অসম ভূখণ্ড পুনরায় তৈরি করে। কর্নেল ইউনিভার্সিটির গ্রহ বিজ্ঞানী এবং গবেষণার প্রধান লেখক সামান্থা ট্রাম্বো এএফপিকে বলেছেন যে তারা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে এই কার্বনের উদ্ভব আভ্যন্তরীণ, সম্ভবত এটা আভ্যন্তরীণ মহাসাগর থেকে উদ্ভূত হয়েছে। কিন্তু গবেষকরা বলছেন যে কার্বন গ্রহের অভ্যন্তর থেকে শিলা-সদৃশ কার্বনেট খনিজ থেকেও উঠে আসতে পারে, যা বিকিরণ পরবর্তীতে ভেঙে CO2 হয়ে যেতে পারে। ট্যারা রেজিওতে টেবিল লবণও সনাক্ত করা হয়েছে, যা ইউরোপের বাকি দাগযুক্ত সাদা সমভূমির তুলনায় এলাকাটাকে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি হলুদ করে তুলেছে – এবং বিজ্ঞানীরা মনে করেন এটা সমুদ্র থেকেও এসেছে।
দুটো বড় মহাকাশ মিশন ইউরোপা এবং এর রহস্যময় মহাসাগরকে ঘনিষ্ঠভাবে দেখার পরিকল্পনা করে ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সির জুপিটার মুন প্রোব জুস এপ্রিলে চালু হয়েছিল, যখন নাসার ইউরোপা ক্লিপার মিশন ২০২৪ সালের অক্টোবরে পাঠানোর কথা রয়েছে। যদি ভবিষ্যতে কোনো মিশন জীবন আবিষ্কার করে, তাহলে ১০ কিলোমিটারেরও বেশি বরফের নীচে এইরকম চরম পরিস্থিতিতে বসবাস করতে সক্ষম কিছু ছোটো জীব যেমন আদিম জীবাণু পাওয়া হবে।