গত সপ্তাহে একটা বিধ্বংসী ভূমিকম্প আঘাত হানার আগে মরক্কোতে রহস্যময় আলো দেখা গেছে বলে মনে হচ্ছে, যদিও বিজ্ঞানীরা এখনও এর কারণ কী তা বের করতে পারেননি। গত শুক্রবার পূর্ব মরক্কোর হাই এটলাস পর্বতমালায় ৬.৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। মঙ্গলবার রয়টার্স জানিয়েছে, এতে কমপক্ষে ২৯০০ জন মারা গেছে এবং প্রায় ৫৫০০ জন আহত হয়েছে।
লোকেরা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভূমিকম্প আঘাত হানার আগে আকাশ জুড়ে আলোর উজ্জ্বল ঝলকের ভিডিও নিয়ে আলোচনা করেছে। যদিও এর সত্যাসত্য এখনো জানা যায়নি। তবে বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে এটা “ভূমিকম্পের আলো” নামে পরিচিত একটি বায়বীয় ঘটনার উদাহরণ হতে পারে। ভূমিকম্পের আগে এই আলোর ঝলকানি নিয়ে প্রাচীন কাল থেকেই নানা প্রচলিত কথা আছে। এছারাও পিবিএস জানিয়েছে মেক্সিকো সিটিতে ২০২১ সালের ভূমিকম্পের আগে রহস্যময় উজ্জ্বল ফ্ল্যাশ ক্যামেরায় ধরা পড়েছিল, ২০২২ সালের ভূমিকম্পের আগে পূর্ব জাপানে আলোর ঝলকানি দেখা গেছে, দ্য গার্ডিয়ান সেই সময় রিপোর্ট করেছিল।
SETI ইনস্টিটিউটের জিওফিজিসিস্ট ফ্রাইডম্যান ফ্রয়েন্ড ১৬০০ এর দশক থেকে সংগৃহীত সম্ভাব্য “ভূমিকম্পের আলো” সম্পর্কে ৬৫ টা প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে একটি গবেষণাপত্রের কাজ করেছেন। তার ধারণা ভূমিকম্পের আলো স্থির তড়িতের একটা বিস্তৃত রূপ হতে পারে। টেকটোনিক প্লেটগুলি একসাথে ঘর্ষণের ফলে বৈদ্যুতিক বিভবের পার্থক্য হয় ফলে যথেষ্ট তড়িৎ তৈরি হয় যার জন্য উজ্জ্বল আলোর ঝলক তৈরি হয়।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ (ইউএসজিএস) ঘটনাগুলির ব্যাখ্যা সম্পর্কে বলেছে ভূ-পদার্থবিদরা ভূমিকম্পের সময় এবং কেন্দ্রস্থলের কাছে অস্বাভাবিক আলোর পৃথক পৃথক প্রতিবেদনগুলো আসলে ভূমিকম্পের আলোকে প্রতিনিধিত্ব করে বলে মনে করেন, তবে ভূমিকম্প পূর্ববর্তী আলোর ঝলকের এখনো কোনো প্রমাণ বা সঠিক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। ঝলকানির জন্য অন্যান্য সম্ভাব্য ব্যাখ্যাও থাকতে পারে, যেমন, প্রাথমিক কম্পনগুলি বিদ্যুতের লাইনগুলোকে নাড়া দেয়, ফলে বিদ্যুতের আর্ক তৈরি হতে পারে। তবুও,তারা এই সম্ভাবনাকে বাদ দিতে পারেননি যে আলোর ঝলক ভূমিকম্পের সাথে যুক্ত হতে পারে।